চট্টগ্রামে আওয়ামীলীগ অফিসে ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা
চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজার এলাকায় চট্টগ্রাম-১০ আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু’র নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার সময় পুলিশের ওপরও বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছিল । সে হামলার ঘটনায় পুলিশও একটি মামলা করেছে। এ মামলায় ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীসহ মোট ৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে গত বুধবার(১৯ জুলাই) নৌকার প্রার্থীর কার্যালয়ে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহেদ খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ চাকমা জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার সময় সড়কে সাধারণ যানবাহন ভাংচুর প্রতিরোধ করতে গেলে পুলিশের ওপর আক্রমণ, কর্তব্যকাজে বাধাদান এবং পুলিশের ব্যবহৃত গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। হামলায় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা আরও ১০ জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করি। তাদের নাম এজাহারে উল্লেখ আছে।’
গত বুধবার বিকেলে বিএনপি চট্টগ্রাম নগরীতে কেন্দ্রঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। পদযাত্রা শেষে ফেরার পথে বিএনপির একদল নেতাকর্মী নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু’র প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করে। এসময় প্রচারণার গাড়িসহ রাস্তায় চলাচলরত বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের পাশাপাশি নগরীর কোতোয়ালী থানার নুর আহমদ সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করে।
মহিউদ্দিন বাচ্চু’র কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে নগরীর খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর এসআই শাহেদ খানের দায়ের করা মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করতে আসার সময় বেআইনি জনতা দলবদ্ধ হয়ে রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। ওয়াসার মোড়ে দায়িত্বরত এসআই জামাল উদ্দিন ও এএসআই রাজেশ বড়ুয়া তাদের রাস্তা থেকে সরে যাবার অনুরোধ করলে তাদের এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়।
কনস্টেবল এনামুল হক ও মেজবাহ উদ্দিন তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে গেলে আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপর থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তাদের আহত করা হয়। এসময় সিএমপির একটি টহল গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পরে আরও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যাবার সময় ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ আসামির তালিকায় থাকা কয়েকজনের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে উসকানি দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। উল্টো এখন পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। গত (বুধবার) রাতেও অনেকের বাসায়-বাসায় গিয়ে হয়রানি করেছে। আমরা আওয়ামী লীগ ও পুলিশের এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’