Breakingচট্টগ্রাম অঞ্চলশিক্ষা / চিকিৎসাশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

চট্টগ্রামের বই মেলার সমাপনী…. ভাঙলো মিলন মেলা

চেঙ্গী দর্পন, চট্টগ্রাম : গত ২১ দিন ধরে চট্টগ্রামে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম পাড়ায় যে মিলনমেলা বসেছিল তাতো সত্যিই ভাঙলো। বইকে ঘিরে যে বাঙালী আড্ডায় মেতে উঠতে পারে, নিজের সংস্কৃতি, আত্মপরিচয় কে জানার চেষ্টা করে তা বোধ হয় অমর একুশের বইমেলা না হলে ঠিক বোঝা যায় না। মেলায় বইয়ের বিক্রি কেমন হয়েছে, কার বই, কোন বই বেশি বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে বড় কথা হলো — লেখক, পাঠক, দর্শক, প্রকাশকদের মাঝে কিছুটা আত্মিক যোগাযোগ তো ঘটে। সেটিই বা কম কিসে। শুধু প্রকাশক- লেখক- ক্রেতা- দর্শক নয় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সংস্কৃতজন, পেশাজীবীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়ে উঠেছিল। যদিও এবারের মেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে, বইয়ের স্টল নিয়ে প্রচুর অভিযোগ ছিল নানা জনের।

২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্বরে বইমেলা মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন সহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, অমর একুশ বইমেলা ২০২৩-এ অংশ গ্রহণকারী ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রকাশকদের মাঝে সনদ প্রদান ও সাজ সজ্জায় শ্রেষ্ঠ স্টলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বইমেলা ঘুরে দেখছেন তথ্যমন্ত্রী- মেয়র সহ অন্যরা

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আবহমান বাংলার সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করতে হলে তাদের হাতে বই তুলে ধরতে হবে। আকাশ সংস্কৃতির কবলে বইয়ের জায়গা কেড়ে নিয়েছে অনলাইন সামাজিক মাধ্যম। নতুন প্রজন্মকে গড়তে হলে আমাদেরকে দায়িত্ব নিয়ে তাদের সাথে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বইগুলো তাদের হাতে তুলে দিন। তিনি বইমেলাকে আরো বড় পরিসরের আয়োজনের জন্য মঞ্চনাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সংযুক্ত করার পরামর্শ দেন।

 

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বই মানুষকে সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিটি ঐতিহাসিক সংগ্রামে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে বই ভূমিকা রেখেছে। মেয়র হিসেবে বীর চট্টলাবাসীর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে এই বইমেলার আয়োজন করেছি আর আগামী বছর এ বইমেলার প্রাঙ্গন আরো বড় করব।

 

বই মেলায় এসেছিলেন খ্যাতিমান- জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুবর্না মুস্তাফা বিশেষ অতিথি হিসেবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বই’ র চোখে ইতিহাস দেখেন পাঠকরা। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামজা, আমার দেখা নয়াচীনের মতো বই গুলোর মাধ্যমে পাঠকরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারছে, বুুঝতে পারছে তৎকালীন ঐতিহাসিক বাস্তবতা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। মেলার আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান বইমেলার আহ্বায়ক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) আবদুল মালেক, কাউন্সিলর ছালেহ আহম্মদ চৌধূরী, মোঃ আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শাহীন আকতার রোজী, রুমকি সেনগুপ্ত, হুরে আরা বেগম। আরো উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী (টিপু), জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, সিবিএর সভাপতি ফরিদ আহমদ এবং সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান। সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস।

এবারের মেলার অনুষ্ঠান মালায় ছিল নজরুল দিবস, মাতৃভাষা দিবস-২১ ফেব্রুয়ারি, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।

 

Related Articles

Back to top button