Breakingচট্টগ্রাম অঞ্চলসারাদেশ

গ্যাস সংকটের কারণে দেশের সচল সার কারখানাগুলো বন্ধ

চট্টগ্রাম:
গ্যাস সংকটের কারণে দেশের সচল সার কারখানাগুলো একেএকে বন্ধ হয়েছে। আবার সারের চাহিদা মেটাতে বিদেশ সার আমদানি বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন কারখানাগুলো বন্ধ থাকার কারণে যন্ত্রাংশে মরিচা ধরেছে। ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি। বন্ধ সার কারখানারগুলোর মধ্যে রয়েছে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল), আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (এএফসিসিএল) এবং যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (জেএফসিএল)।

 

সরকারিভাবে সার আমদানি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) গত আগষ্ট মাসে প্রথম সপ্তাহে আসা চলতি বছরের সর্বশেষ চালানের তথ্যমতে, কাতার থেকে এমভি আকিজ পাল নামক জাহাজে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন সার আমাদানি করে বিসিআইসি। এই জাহাজের ৫ হাজার মেট্রিক টন সার চট্টগ্রামে খালাস হয় এবং বাকী ২৮ হাজার মেট্রিক টন সার মংলায় খালাস হয়। চালানটির প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য ধরা হয় ২৬৮.৩৩ ডলার। আর দেশীয় সব কারখানা বন্ধ রেখে দেশীয় গ্যাস দিয়ে উৎপাদিত সার কর্ণফুলী ইউরিয়া ফার্টিলাইজার (কাফকো) থেকে প্রতি মেট্রিক টন সার কেনা হচ্ছে ৩৬০ ডলার মূল্যে। এতে কাতার থেকে আমদানি করা সারের মূল্য থেকে ৯২ ডলার বেশী দরে কেনা হচ্ছে।

 

বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. সাঈদুর রহমান বলেন, দেশে মোট ২৭ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ মেট্রিক টন আমাদের দেশীয় কারখানা গুলো থেকে উৎপাদনে যোগান দেয়া হয়। বাকী ১৭ লাখ মেট্রিক টন কাফকো ও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে।

 

বর্তমানে দেশীয় কারখানা গুলো বন্ধ থাকায় আমাদানি বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিসিআইসির চেয়ারম্যান সাঈদুর রহমান। কারখানা বন্ধ থাকায় মরিছা ধরে কিছু কিছু যন্ত্রাংশ নষ্টের কথা স্বীকার করেন।

 

আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (এএফসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুণীল চন্দ্র দাশ বলেন,“গত মার্চ মাস থেকে গ্যাস সংকটের কারণে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের (এএফসিসিএল) সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কখন আবার চালু হবে ঠিক বলা যাচ্ছেনা। তিনি আরো দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকায় অনেক যন্ত্রাংশ দিনে দিনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কখন থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হবে তা ঠিক বলা যাচ্ছেনা। তাঁর মতে গ্যাস সরবরাহ ঠিক থাকলে ১৬/১৭ হাজার টাকায় প্রতিটন সার উৎপাদন হয়।

 

 

সিইউএফএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘদিন সচল কারখানা বন্ধ থাকায় কারখানার অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেয়। এতে সচল কারখানাই অচল হয়। তিনি অবশ্য জানান, ৩০ অক্টোবর থেকে সিইউএফএলে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সার উৎপাদনে যেতে একমাস সময় লাগবে ।

 

বিসিআইসি সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বরে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) এবং চলতি বছরের মার্চ থেকে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (এএফসিসিএল) এবং গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (জেএফসিএল) বন্ধ হয়ে যায়। এখন দেশীয় সার উৎপাদন কারখানার মধ্যে একমাত্র শাহজালাল সার কারখানা (এসএফসিএল) চালু রয়েছে।

Related Articles

Back to top button