খাগড়াছড়িতে সেইপ এর দক্ষতা উন্নয়ন ওরিয়েন্টেশন ও জেন্ডার সেন্সিটাইজেশন ওয়ার্কশপ
স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি :
“স্মার্ট স্কিলস্ ফর স্মার্ট বাংলাদেশ, উচ্চতর পবৃৃদ্ধির জন্য চাই দক্ষ জনশক্তি” এ প্রতিপাদ্যে খাগড়াছড়িতে জেলা পর্যায়ে দক্ষতা উন্নয়ন ওরিয়েন্টেশন ও জেন্ডার সেন্সিটাইজেশন ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেষ্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেইপ) অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামাজিক প্রচার কর্মসূচীর আওতায়, সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ড. মো: সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া (যুগ্নসচিব) উপ-নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (প্রাইভেট-১) সেইপ প্রকল্প, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন, মাহবুবা ফারজানা (যুগ্নসচিব) জেন্ডার এন্ড স্যোস্যাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিষ্ট সেইপ প্রকল্প, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়।
ওয়ার্কশপের মূল বিষয় জেন্ডার এন্ড স্যোস্যাল ডেভেলপমেন্ট এবং সেইপ এর দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য ভিত্তিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, মাহবুবা ফারজানা (যুগ্নসচিব)।
উপস্থাপনায় উঠে আসে, বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত এক যুগ ধরে দেশের অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও সম্পদশালী দেশে রূপান্তরের যে লক্ষ্য বর্তমান সরকার নির্ধারণ করেছে তা অর্জন করতে হলে আমাদেরকে বর্তমানের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে আরো ত্বরান্বিত করতে হবে।
কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই উন্নয়ন ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে দেয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২০১৪ সাল থেকে ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেইপ)’ বাস্তবায়ন করছে। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে আটলক্ষ চল্লিশ হাজার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা হবে।
সুবিধা বঞ্চিত মানুষ যেমন, ক্ষুদ্র্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী, চর ও হাওরসহ দুর্গম এলাকার অধিবাসীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে (বেদে, সাপুরে, হিজরা, জেলে, মুচি, সুইপার) প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ চলাকালে এসব জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ ভাতার পাশাপাশি কমপক্ষে এক লক্ষ জনকে বিশেষ বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারীদের চাকুরি পেতে সহযোগিতা করা হয়। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারীদের ৭০ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে বলে জানানো হয়।
বিশেষ জনগোষ্ঠীর (নারী, হতদরিদ্র, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধি) জন্য বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণদের সনদপত্র প্রদান করা হয়। শিল্প কারখানায় কর্মরতরা দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ নিলে অধিক বেতনে চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি হয়। সর্বোপরি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়ে আপনাকে দিতে পারে সুখী ও সমৃদ্ধ জীবনের ঠিকানা।
বয়স এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ট্রেডভেদে কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি, অষ্টমশ্রেণি, এসএসসি ও এইচএসসি পাশ পর্যন্ত। যে সব প্রতিষ্ঠানে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে, শ্রম বাজারের চাহিদার আলোকে বেসরকারি পর্যায়ে ১৩টি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনস, সরকারি পর্যায়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই বিভাগের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেইপ এর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, নির্বাচিত জন প্রতিনিধি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা এতে অংশগ্রহণ করেন।