খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির তৈবুংমা-অ-খুম বগনাই উৎসব পালিত
চেঙ্গী দর্পন, স্টাফ রিপোর্টার :খাগড়াছড়িতে ঠাকুরছড়া জাগরণ ক্লাব ও পাঠাগারের আয়োজনে উৎবমূখর পরিবেশে তৈবুংমা-অখুম বগনাই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৫এপ্রিল ২০২২ ) খাগড়াছড়িস্থ ঠাকুরছড়া’র চেঙ্গী নদীতে এ উৎসব পালন করা হয়। এ উৎসবে শত শত নারী-পুরুষ, বিভিন্ন বয়সী ও সর্বস্তরের মানুষ নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে অংশগ্রহণ করে। এ সময় অংশগ্রহণকারী সকলের মাঝে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস দেখা যায়। তৈবুংমা পূজা’র উৎসবে ঠাকুরছড়া জাগরন ক্লাব ও পাঠাগারের সভাপতি প্রজ্জ্বল ত্রিপুরা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জ্ঞান দত্ত ত্রিপুরা।
নদীতে পুষ্প অর্পনকালে উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রজ্জ্বল ত্রিপুরা বলেন, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনকে ঘিরে আমরা প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছরও এই গঙ্গাদেবীকে পুজো ও পুষ্প অর্পন করে এলাকা, জাতি, সমাজ ও দেশের মঙ্গল কামনা করে থাকি। এ দিনে বলা আমরা সকল ভেভাভেদ ভুলে গিয়ে নদীতে এসে মা গঙ্গাদেবীর কাছে পুষ্প অর্পনের মাধ্যমে সার্বিক মঙ্গল কামনা করে থাকি। এদিন আমরা পুরোনো সকল বিবাদ ভুলে গিয়ে পরস্পরের বাড়িতে মিষ্টান্ন সহ নানা ধরনের মুখোরোচক খাবার পাঠাই। এই উৎসবের প্রধান আকর্যণ থাকে জনপ্রিয় খাবার ‘গণত্মক বা পাচন’। এর পাশাপাশি থাকে নানা ধরনের পিঠা, বিভিন্ন ধরনের ফলমূল। এছাড়া ২৫ থেকে ৩০ ধরনের সবজির সংমিশ্রণে তৈরি হয় বিশেষ ধরেনর খাবার। এদিন দরিদ্র লোকদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। গ্রামের মানুষ গ্রাম-গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়ায় এবং পরস্পরে কুশালাদি বিনিময় করে। এই দিনে সকল শ্রেণির মানুষ সাধ্যমত সাজগোজ করে।
খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জ্ঞান দত্ত ত্রিপুরা বলেন, বিসিকতাল এই দিন নববর্ষকে বরণ করা হয়। নববর্ষের প্রথম দিনে এরা আগমী দিনের সুখ ও সম্পদের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে। এ দিনের বিশেষ আয়োজন থাকে সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য নদীতে ফুল দিয়ে প্রণাম করা। অবশ্য এই উৎসবের আগে জলপূজা করার রীতি আছে।
এ সময় খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের নারী সদস্য গৌরী মালা ত্রিপুরা, গোলাবাড়ী ইউনিয়নের নারী সদস্য মিলি ত্রিপুরা, এলাকার কার্বারী অরুণ বিকাশ ত্রিপুরা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক দীপায়ন রোয়াজা, ইঞ্জিনিয়ার ভবতোষ রোয়াজা, ঠাকুরছড়া শিবমন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খগেন ত্রিপুরা এবং পুরোহিত্যে করেন সর্বানন্দ ত্রিপুরা, ক্লাব ও পাঠাগারের নির্বাহী সদস্য সুকান্ত ত্রিপুরা, রেভিলিয়ন রোয়াজা, তমেট মিত্র রোয়াজা, সুজন রোয়াজা, বিজয় রোয়াজা সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।