খাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরাদের তৈবুংমা-অ-খুম বগনাই উৎসব উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়িতে ঠাকুরছড়া জাগরণ পাঠাগার-ক্লাব ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে উৎব মূখর পরিবেশে তৈবুংমা-অ-খুম বগনাই উদযাপিত হয়েছে।

 

রবিবার (১৪এপ্রিল) খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ঠাকুরছড়াস্থ চেঙ্গী নদীতে এ উৎসব পালন করা হয়। এ উৎসবে শত শত নারী-পুরুষ, বিভিন্ন বয়সী তরুণ তরুণী ও ঠাকুরছড়া এলাকাবাসীরা নিজেদের ঐতিহ্য বাহী পোশাক পড়ে অংশগ্রহণ গঙ্গাদেবীর প্রার্থনায় অংশ নেন। এ সময় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে আনন্দ- উচ্ছ্বাস দেখা যায়।

 

এ উপলক্ষে নদীতে পুষ্প অর্পনকালে উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রজ্জ্বল ময় ত্রিপুরা বলেন,আজ ত্রিপুরাদের বিসিকাতাল অর্থাৎ নববর্ষের দিনকে ঘিরে আমরা প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছরও গঙ্গাদেবীকে পুজা ও পুষ্প অর্পন করে দেশ ও সারাবিশ্বের সকলের মঙ্গল কামনা করে থাকি। এ দিনে আমরা সকল ভেভাভেদ ভুলে গিয়ে নদীতে এসে মা গঙ্গাদেবীর কাছে পুষ্প অর্পনের মাধ্যমে সার্বিক মঙ্গল কামনা করে থাকি।

 

 

খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য গৌরী মালা ত্রিপুরা বলেন,নদীতে পুষ্প অর্পনের মধ্যদিয়ে আমরা পুরাতন বছকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিই। পুরোনো বছরের সকল দুঃখ-কষ্ট, বিবাদ ভুলে পরস্পরের বাড়িতে মিষ্টান্নসহ নানা ধরনের মুখরোচক খাবার পাঠাই এবং বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ায়।

 

 

খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জ্ঞান দত্ত ত্রিপুরা বলেন, বিসিকতাল যা ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নতুন বছরের নতুন দিন।এ দিন সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য নদীতে ফুল দিয়ে প্রণাম করা হয়। আমরা এইভাবে বিসিকাতাল অর্থাৎ নতুন বছরকে বরণ করে নিই।

প্রকৌশলী ভবতোষ ত্রিপুরা,আমাদের ত্রিপুরাদের তিনদিনব্যাপি বৈসু উৎসব পালন করা হয়। হারি বৈসু, বৈসুমা ও বিসিকাতাল। আমরা আজ বিসিকাতাল অর্থাৎ নতুন বছরকে নদীতে ফুল দিয়ে প্রণাম করে,বয়োজেষ্ঠদের মাঝে নতুন কাপড় প্রদান বরণ করে থাকি। জাতি,সমাজ, দেশ ও সার্বিক মঙ্গল কামনায় আমরা নদীতে ফুল দিয়ে প্রণাম করে থাকি।

 

 

জানা যায়, এই উৎসবের প্রধান আকর্যণ থাকে জনপ্রিয় খাবার ‘গন্তক বা পাজন’। এর পাশাপাশি থাকে নানা ধরনের পিঠা, বিভিন্ন ধরনের ফলমূল। এছাড়া ১০১ থেকে ১০৮ ধরনের সবজি ও বিভিন্ন উপকরণ সংমিশ্রণে তৈরি হয় বিশেষ ধরেনর খাবার। এদিন অসহায় লোকদের মাঝে উন্নতমানের খাবার,নতুন কাপড় বিতরণ করা হয়। গ্রামের মানুষ গ্রাম-গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়ায় এবং পরস্পরে কুশালাদি বিনিময় করে। এই দিনে সকল শ্রেণির মানুষ সাধ্যমত নিজেদের ঐতিহ্যবাহী রিনাই-রিসা,ধ্যূতি- পাঞ্জাবি পরিধান করে থাকে।

 

এ সময় ঠাকুরছড়া জাগরণ পাঠাগার-ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত ত্রিপুরা, হামরনাই বন্থা সভাপতি দেবাশীষ রোয়াজা,বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক দীপায়ন রোয়াজা সহ শত শত ত্রিপুরা নর-নারীরা উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Back to top button