খাগড়াছড়ি উদ্ধারকৃত বিরল বন মোরগ অবমুক্ত করলো বনবিভাগ

স্টাফ রিপোর্টার,খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়িতে বনবিভাগের উদ্ধারকৃত একটি বিরল প্রজাতির বনমোরগ প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের উপজেলাস্থ বনবিভাগের বিভাগীয় কার্যালয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আনুষ্ঠানিকভাবে বন মোরগটি অবমুক্ত করেন খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের নেন্সী বাজার এলাকায় একটি বনমোরগ অবৈধভাবে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে—এমন তথ্য পেয়ে বনবিভাগ দ্রুত কৌশলগত অভিযান পরিচালনা করে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা’র নির্দেশনায় সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। অভিযানের অংশ হিসেবে বনবিভাগের একজন সদস্য ক্রেতা সেজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে নির্ধারিত স্থানে টিম পৌঁছে সফল অভিযান চালিয়ে বন মোরগটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার শেষে বন মোরগটিকে সুস্থ অবস্থায় প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়।
অবমুক্তকালে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা বলেন,বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বনমোরগ সহ সকল প্রকার বন্যপ্রাণী ধরা, মারা কিংবা বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। খাগড়াছড়ির বনাঞ্চলে এখনও বিপুল সংখ্যক বন্যপ্রাণী রয়েছে, যা প্রকৃতির অমূল্য অলংকার। বন্যপ্রাণী থাকলেই আমাদের পরিবেশ সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ থাকে।”
তিনি আরও বলেন,“এই অঞ্চলে যারা পর্যটক হিসেবে ভ্রমণে আসেন, তারা যদি প্রকৃতির মাঝে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ দেখতে পান, তাহলে তারা আরও বেশি আনন্দিত হন। এতে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পর্যটন বর্তমানে খাগড়াছড়ির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,“মানুষের যেমন বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে, তেমনি প্রাণীদেরও প্রকৃতিতে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। দিন দিন বন উজাড়, অবৈধ শিকার ও পাচারের কারণে অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পথে। আমরা যদি এখনই এগুলো রক্ষা না করি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু বইয়ের পাতায় প্রাণীদের ছবি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হবে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,“বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারলে খাগড়াছড়ি আরও সবুজ, সুন্দর ও পর্যটনবান্ধব জেলা হিসেবে গড়ে উঠবে। এতে এখানকার মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। আমরা সবাই মিলে সচেতন হলে একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য খাগড়াছড়ি বিনির্মাণ অবশ্যই সম্ভব।”
বনমোরগ অবমুক্তকালে খাগড়াছড়ি সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন সহ বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।




