Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

খাগড়াছড়িতে সহিংসতার জন্য ইউপিডিএফকে দায়ী করল সেনাবাহিনী

৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার , খাগড়াছড়ি :
এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতার পর খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় চতুর্থ দিনের মতো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ অব্যাহত থাকায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

 

 

এমন পরিস্থিতিতে এই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) সরাসরি দায়ী করেছেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ।

 

 

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ইউপিডিএফ ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে সাধারণ পাহাড়ি নারী ও ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। এসব কর্মসূচিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে দেশীয় ও অটোমেটিক অস্ত্র ব্যবহার করে ফায়ার করা হচ্ছে। রিজিয়ন কমান্ডার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবকিছু করার অঙ্গীকার করে ইউপিডিএফকে অবিলম্বে অবরোধ তুলে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানান।

 

খাগড়াছড়ি সদর, পৌরসভা ও গুইমারা উপজেলায় এখনো ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে। এর ফলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শহর ও গুইমারার অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিশেষ করে পর্যটকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

 

এদিকে, জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অবরোধ চতুর্থ দিনেও চলছে। যদিও সংগঠনটির পক্ষ থেকে গতকাল অবরোধ শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তবুও আজ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরে সীমিত পরিসরে ব্যাটারিচালিত টমটম চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় সেনাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

 

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার জেরে রবিবার গুইমারায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই সহিংসতায় তিনজন নিহত হন এবং সেনা কর্মকর্তাসহ কয়েকজন আহত হন। রামসু বাজারসহ বহু ঘর-বাড়ি ও অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

 

দুপুরে জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে জানিয়েছেন, সহিংসতার ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পুনর্বাসন ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

 

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, অবরোধকারীদের সাথে প্রশাসনের আলোচনা হয়েছে। তাদের ৮ দফা দাবির মধ্যে ৭টি অ্যাড্রেস করা হয়েছে। তিনি আহবান জানান, “তারা যদি অবরোধ প্রত্যাহার করে, তবে আমরা ১৪৪ ধারা তুলে নেব।”

Related Articles

Back to top button