Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

খাগড়াছড়িতে বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হল শারদীয় দুর্গাপূজা

স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি :
সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়িতেও হাসি-আনন্দে বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীতে দেবীকে অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় জানালেন সনাতনী সম্প্রদায়।

 

রবিবার (১৩ অক্টোবর) ভোর থেকেই মন্ডপে মন্ডপে আনন্দ ও বিষাদমাখা অনুভূতিতে পূর্ণ ছিলো খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন দেবী দুর্গা মন্ডপ প্রাঙ্গণ। খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মন্ডপে মন্ডপে সকালে পূজা শেষে হয়েছিল আরতি ও মন্ত্রপাঠ অনুষ্ঠান। এরপর ভক্তরা সিঁথির সিঁদুর অক্ষয় রাখতে স্বামীর মঙ্গল কামনায় মা দুর্গার চরনের সিঁদুর একে অপরের সিঁথিতে দিয়ে ঢাকের তালে তালে নাচতে থাকে। সিঁদুর খেলা শেষে বিকালে জেলা সদরস্থ বিভিন্ন মন্ডপ থেকে প্রতিমাগুলো নামিয়ে আনার পরপরেই শোভাযাত্ৰা বের করা হয়। বিকেল ৩টা থেকে খাগড়াছড়ি শ্রী শ্রী লক্ষী নারায়ন মন্দির,খাগড়াপুর অখন্ড মন্ডলী সার্বজনীন দুর্গা মন্ডপ,শান্তিনগর,আনন্দ নগর মন্ডপ,গাছবান ত্রিপুরা পাড়া দুর্গা মন্ডপসহ বিভিন্ন পূজামন্ডপের প্রতিমাগুলো ট্রাক গাড়িতে করে শহরের প্রধান সড়কে বিজয়া দশমী’র শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।শোভাযাত্রা শেষে জেলা সদরের গঞ্জপাড়াস্থ চেঙ্গী নদীতে বিসর্জন দেয়া হয়।

 

জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূইয়া বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা সুস্থ্য ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।দুর্গাপূজা উৎসব আমাদের সকলের। পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মেলবন্ধনে এবং সৌহার্দপূর্ণভাবে বসবাস করতে হবে।

 

সনাতনী সংগঠক জয় প্রকাশ ত্রিপুরা বলেন,মহা দশমীর বিহিতপূজা ও দর্পণ-বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়েই শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। আবারও আরেকটি বছর অপেক্ষার পর দেবী দুর্গার দর্শনে অপেক্ষায় থাকতে হবে।

 

সাংস্কৃতিক সাংস্কৃতিক শিউলী বনিক বলেন,মহিষাসুর বধের আনন্দ উৎসব থেকেই দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমী পালন করা হয়।দেবী দুর্গা পিতৃগৃহ থেকে কৈলাসে গমন করেন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।

 

প্রেমা দে বলেন,আজকে দুর্গা মায়ের নিরঞ্জন। গতকালই ছিল বিজয়া দশমী। আমাদের আনন্দকে ধরে রাখার জন্য আজকে নিরঞ্জন(ডৃবানো)অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাচ্ছি। আমরা আনন্দ ভাগাভাগি করতে এখানে এসেছি। আমরা সবার কাছে এটাই প্রার্থনা করি আমাদের দেশে সকল শান্তি ফিরে আসুক। সবাইকে বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা।

 

পিংকি বড়ুয়া বলেন,দশমী মানেই দেবীদুর্গার নিজ আলয়ে ফিরে যাওয়া, ভক্তদের অপেক্ষা বাড়লো আরও একটি বছরের।

খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, দুর্গোৎসব শুরু থেকে বিসর্জন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত এ সংক্রান্তে জেলার কোথাও কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সংবাদ পাওয়া যায় নাই। পরবর্তীতে যে কোন ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে হিন্দু অধ্যুষিত ও পূজা মন্ডপ এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারীসহ পুলিশি টহল অব্যাহত রাখা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন,খাগড়াছড়িতে এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা সু-সম্পন্ন হয়েছে । বিকাল ৫টার মধ্যে জেলায় ৬১টি পূজামন্ডপ থেকে ৫৮টি পূজামন্ডপের দুর্গা বিসর্জন দেয়া হয়েছে এবং ৩টি ঘটপূজা হওয়ায় বিসর্জন দেয়া হয়নি। এদিন বিভিন্ন স্থানে প্রতিমাগুলো যেন নির্বিঘ্নে ও সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন দিতে পারে সেজন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সবাইকে শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

Related Articles

Back to top button