খাগড়াছড়িতে ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার,খাগড়াছড়ি :
ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস ও ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে প্রতিকী ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে । প্রতিকী ম্যারাথনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে জানানো হলো গণআন্দোলনের গৌরবগাঁথা, আর শ্রদ্ধা জানানো হলো আন্দোলনের শহীদদের প্রতি।
১৮ জুলাই ২০২৫ ,শুক্রবার সকালে জেলা শহরের চেঙ্গী স্কয়ারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আয়োজিত এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমাদের ইতিহাসে এমন অনেক আন্দোলন আছে, যেগুলো আজকের স্বাধীনচেতা বাংলাদেশকে গড়ে তুলেছে। খাগড়াছির শহীদ মো. মহিন-সহ অসংখ্য সাহসী মানুষ নিজেদের জীবন দিয়ে যে আলোর পথ দেখিয়েছেন, আজকের এই প্রতীকী ম্যারাথন সেই আলোকে স্মরণ করার এক অভিনব প্রয়াস। এই আয়োজন শুধু দৌড় নয়-এ এক চলমান চেতনার বহিঃপ্রকাশ।”
প্রধান অতিথি আরও বলেন, “আজকের তরুণ প্রজন্মকে আন্দোলনের ইতিহাস জানাতে হবে,এই আয়োজন শুধু খেলা নয়—এটি একটি শিক্ষা, একটি অনুপ্রেরণা।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। চেঙ্গী স্কয়ার মোড় থেকে ধর্মপুর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই প্রতীকী দৌড়ে অংশ নেন প্রায় তিন শতাধিক প্রতিযোগী।
প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন মাইকেল ত্রিপুরা, দ্বিতীয় সোমেশ ত্রিপুরা এবং তৃতীয় মো. পারভেজ। পরে ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক পুরস্কার বিতরণ কালে বলেন, “শহীদ মো. মহিন-এর পরিবারের সদস্যদের আজকের এই আয়োজনে উপস্থিতি আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। গণঅভ্যুত্থান শুধু রাজপথের আন্দোলন নয়, এটি মানুষে মানুষে সংযোগের একটি মহান অধ্যায়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনে বিশেষ অবদান রাখা তৎকালীন ছাত্রনেতা জাহিদ হাসান, শাকিল শামস ও রাকিব মনি ইফতি। তাঁদের উপস্থিতি নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানার বিরল সুযোগ করে দেয়।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রুমানা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অদ্যক্ষ প্রফেসর মো. সরাফত হোসেন, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পুলক বরণ চাকমা,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিপেন্দু চাকমা, ক্রীড়া সংস্থার সদস্য নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
ম্যারাথনের সময় প্রতিযোগীদের স্বাস্থ্য সহায়তায় একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম এবং রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত ছিল।
এই প্রতীকী ম্যারাথনের মাধ্যমে খাগড়াছড়িবাসী শুধু দৌড়ায়নি—তারা একযোগে স্মরণ করেছে আত্মত্যাগ, ঐক্য আর সাহসিকতার সেই দিনগুলোকে, যেগুলো আজকের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছে।