কবিরহাটে সড়ক সংস্কারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
চেঙ্গী দর্পন,স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী : নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় পুরনো একটি সড়ক সংস্কারকাজে সিডিউল বহির্ভূত ভাবে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার সংস্কার কাজে নিন্মমানের ইট-বালু ও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কের পাশে থাকা গাইড ওয়াল গুলোও নিন্মমানের ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকারের বি.আর.আর.পি প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি কবিরহাট উপজেলা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে চলছে এই নির্মাণকাজ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালমা ট্রেডাস এর কাজটি নুরুল আমিন চৌধুরী হিরন নামে এক ব্যক্তি করছেন।
এলজিইডি কবিরহাট উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের শুরুর দিকে ৭০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ওটারহাট-নাছিরারটেক সড়কের ১ হাজার ৮শত মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিডিউলের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো সড়কে নিন্মমানের কাজ করছেন ঠিকাদার। কাজের শুরু থেকেই তদারকি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তড়িঘড়ি করে এসব অনিয়ম করে চলছে। নিন্মমানের কাজের বিষয়টি স্থানীয় বাটইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.জসিম উদ্দিন শাহীনের নজরে পড়লে তিনি সড়কের কাজে বাঁধা দেন এবং ওই সড়ক থেকে নিন্মমানের কাজের অভিযোগ এনে ফেসবুকে লাইভ করেন। তারপর কবিরহাট উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগকে মৌখিক ভাবে জানিয়েও ফল পায়নি। এরপরও খারাপ ইট দিয়ে রাস্তা করে সড়কটি বর্তমানে পিচ ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসাী বলছে, সামনে বর্ষায় সব উঠে যাবে। এত খারাপ রাস্তা করার কী দরকার ? অপরদিকে শ্রমিকেরা বলছেন, ইট ভালো আর খারাপে মিশ্রণ হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা তদারকি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান উচ্চ পর্যায় থেকে কবিরহাট উপজেলার সকল ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নোয়াখালীর আওতায় বাস্তবায়িত কাজ গুলো সঠিকভাবে অন্তত একবার তদন্ত করা হোক। তাহলে অনেক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার নুরুল আমিন চৌধুরী নিন্মমানের ইট-বালু ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অফিসের লোক সব সময় থাকে খারাপ কাজ হবে কেন। ডিপামেন্ট কাজ দেখে নিচ্ছে। তবে কিছু ১৯-২০ হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এটা গ্রাম্য সড়ক। আপনারা হাইওয়ে যে সড়কগুলো হয় ওই গুলো ধরেন। এ গুলোতে আমরা কাজ করাই না পারতে। এখন অনেক সঙ্কট। কাজ করলে দুই বছর লেগে যায় টাকা পেতে। অনেক ঠিকাদার কাজ করতে চায়না। এ রাস্তাটা ৩-৪ ঠিকাদার কাজ করতে এসে ফিরে চলে গেছে। এলাকা খারাপ, রাস্তা খারাপ, লোকাল লোকজন খারাপ। কেউ কাজ করতে চায়না।
বাটইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.জসিম উদ্দিন শাহীন বলেন, সড়কে নিন্মমানের কাজ হচ্ছে দেখে আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী ও কবিরহাট পৌরসভার মেয়রকে অবহিত করি এবং ফেসবুকে একটি লাইভ করি। তাছাড়াও উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় নিন্মমানের কাজের বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এরপরও নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ চালিয়ে যায় ঠিকাদার।
এ বিষয়ে কবিরহাট উপজেলা প্রকৌশলী হরষিত কুমার সাহা বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি সিডিউল মেনে কাজ করছে। তিনি সড়ক সংস্কারে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ নাকচ করে দেন।