আলী কদমে বুনো হাতির আক্রমনে নিহত ২, আহত ১
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, আলীকদম (বান্দরবান) : বান্দরবানের আলীকদমে বুনো হাতির আক্রমণে দুই ব্যক্তি নিহত এক জন আহত হয়েছে। নিহতরা হলেন ওমর আলী পাড়ার মোঃ আব্দু ছোবাহানের ছেলে মনছুর আলম(১৮) ও মান্নান মেম্বার পাড়া মৃত মোঃ হোসেনের ছেলে হুমায়ন কবির (১৭)। আহত হয়েছেন হাফেজ নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ জুবায়ের (১৮)। রোববার রাত ১টায় উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের কোনা পাড়া এলাকায় মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে।
শনিবার রাত আনুমানিক ১০ টায় মারাইনতং পাহাড় এলাকা থেকে দল বেধে নেমে আসে ১১ টি বুনো হাতির একটি পাল। রাত আনুমনিক ১টার দিকে আলীকদম উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কানা মাঝির ঘাট কোনা পাড়া এলাকায় বুনো হাতির পালটি আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা হাতির পালটিকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আগুনের মশাল ও লাঠিসোটা নিয়ে তাড়া করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতির পালটি পাল্টা আক্রমন করলে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। হাতির পালটি ঘটনা স্থল থেকে চলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মনছুর আলম (১৮) মৃত ঘোষনা করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে হুমায়ন কবির (১৭)কে উন্নত চিকিৎসার জন্য চকরিয়া পাঠানো হলে তিনি চকরিয়া ইউনিক হাসপাতালে মারা যান। অপর একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সংবাদ পেয়েয় রাত ৩টায় আলীকদম থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী রাকিব উদ্দীন জানান, গভীর রাতে বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া হাতির পালটি বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পালটি বাড়িতে আক্রমন করতে পারে ভেবে পালটিকে তাড়া করে স্থানীয়রা। এতে বুনোহাতির পালটি ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমন চালালে ভয়াবহ এদুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ প্রায় এক মাস যাবত হাতির পালটি এই এলাকায় অবস্থান করছে। গত ৪ জানুয়ারী রাত ৮টায় চৈক্ষ্যং ৪নং ও ২নং ওয়ার্ডে হাতির দলটি আক্রমণ করে। এ সময় হাতির দল স্থানীয়দের বেশকিছু বাড়িঘর গুড়িয়ে দেয়।প্রাশাসনকে জানালেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
উল্লেখ্য গত ২৭ ডিসেম্বর ২নং উপজেলার ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ফুটের ঝিরি এলাকায় প্রথম বারের মত বুনো হাতির এই পালকে বিচরণ করতে দেখা গেলেও ক্রমন্বয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিচরণ করতে শুরু করে হাতির পালটি। আনুমানিক সপ্তাহ খানে একই ইউনিয়নের মাংখাই পাড়া ও এর পাশর্^বর্তী এলাকায় অবস্থান করার পর বন বিভাগ পালটিকে মিরিঞ্জা পাহাড় পার করে দিয়েছে এমনটাই জানিয়েছিলেন লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কাইসার জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদের। ৮ জানুয়ারী দৈনিক ভোরের কাগজে প্রকাশিত সংবাদ লিখার সময় পর্যন্ত হাতির পালটিকে সরানোর জন্য কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ওই সময় হাতির পালটি স্থানীয়দের বড় কোন ক্ষতি না করলেও দুএকটি মাটির ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুর রহমান। তিনি বলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে তোলপাড় হলেও প্রশাসন নিরাপত্তামূলক কোন ব্যবস্থা নেয়নি।