Breakingঅপরাধদুর্ঘটনাশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

সিইউএফএলের সার কারখানার বিষাক্ত পানি খেয়ে ৮ মহিষের মৃত্যু

ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেন কর্তৃপক্ষ

চেঙ্গী দর্পন ,স্টাফ রিপোর্টার,চট্টগ্রাম : রাষ্ট্রাত্ব প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির (সিইউএফএল) নির্গত গ্যাসের বর্জ্য বারশতের মাছের চরে গোবাদিয়া খালে প্রবেশ করছে। ফলে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে ওই খালের পানিও। বিভিন্ন সময়ে এ খালের পানি খেয়ে মহিষের মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়।

বৃহস্পতিবার (০৬ মে) দুপুরে গোবাদিয়া খালের পানি খেয়ে স্থানীয়দের ৮টি মহিষের মৃত্যু হয়েছে। এতে আনুমানিক ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, কারখানার বিষাক্ত পানি স্থানীয়দের অবগত না করে খালে ছাড়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মোহাম্মদ এরফান আলীর ৩টি, আবদুল মালেকের ৩টি ও আনোয়ার হোসেনের ২টি সহ ৮টি মহিষ বিষাক্ত বর্জ্য পানি খেয়ে মারা যায়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ে আরো কয়েকটি। ঘটনার পর ঘটনাস্থলে দুপুর ২টায় পরির্দশনে আসেন চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির (সিইউএফএল) ল্য্যবরেটেরি ডেপুটির প্রধান রূপ শংকর চৌধুরী। তিনি বলেন, মহিষের মৃত্যুর ঘটনার পর আমরা খালের পানি সংরক্ষণ করছি। পরীক্ষা-নীরিক্ষা না করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি সিইউএফএলের নির্গত গ্যাসের পানি বারশত ইউনিয়নের গোবাদিয়া খাল দিয়ে চলাচল করে থাকে। খালের আশপাশে স্থানীয়দের গরু-ছাগল ও মহিষ বিচরণ করে। পূর্বে কারখানার বিষাক্ত গ্যাসের পানি ছাড়লে আগে এলাকায় মাইকিং করত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের মাইকিং ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত পানি ছেড়ে দিলে স্থানীয়দের গবাদি গরু-মহিষ মারা যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদ এরফান আলী দাবি- সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের কোনো ধরনের অবগত না করে বিষাক্ত পানি-বর্জ্য ছাড়াতে তার মহিষের মৃত্যু হয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, আমাদের স্থানীয়দের প্রায় আড়াই শত গরু-মহিষ আছে। এখন আমরা এ গুলো নিয়ে আতঙ্কে আছি। দুপুর পর্যন্ত আটটি মহিষ মারা গেছে। আমরা খুঁজে দেখছি আর কোথাও মরে পড়ে আছে কিনা। এরআগেও খালের পানি খেয়ে মহিষের মৃত্যু হয়েছে। সেটার ক্ষতিপূরণও দেয়নি সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্ বলেন, সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ বিষাক্ত বর্জ্য ও অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার কারণে এ দূর্ঘটনা। সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ এই দায় স্বীকার করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহিমের মুঠোফোনে বলেন, মহিষ মারা যাওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পূরণ দেওয়া হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর (চট্টগ্রাম) আঞ্চলিক পরিচালক মফিদুল আলম জানান, সিইউএফ এলের বিষাক্ত বজ্যে ও অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার ফলে মহিষের মৃত্যুর খবরটি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Back to top button