
স্টাফ রিপোর্টার , কুমিল্লা :
দুই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হলেও এখনো চেয়ারম্যানের পদ বহাল রয়েছে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকার চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন।নিয়মিত অফিস না করায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। একাধিক মামলার হাজিরা দিতে দৌড়াদৌড়ি করায় সেবা নিতে আসা জনসাধারণ সেবা পাচ্ছেন না, ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায় , ২০২৪ সালের মে মাসে ঢাকার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত (৫ম) দি নেগোশি য়েবল ইনস্ট্রুমেন্টস অ্যাক্ট-১৯৮১-এর ১৩৮ ধারায় দায়ের করা দুটি মামলায় জাকির হোসেনকে চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৬০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। মামলা গুলোর মধ্যে দায়রা মামলা নং ৩০৫/২০২৪-এ ২৫ লাখ এবং দায়রা মামলা নং ২৬৪/২০২৪-এ ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪ (৪) (খ) ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে- কোনো চেয়ারম্যান বা সদস্য দুর্নীতি, অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দণ্ডিত হলে তিনি পদে বহাল থাকতে পারবেন না। কিন্তু আইন থাকা সত্ত্বেও কীভাবে জাকির হোসেন এখনো ক্ষমতায় রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। জয় মিয়া সহ স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একই গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি বন্দরের নিলাম থেকে স্বল্প দামে গাড়ি এনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিতেন। কিন্তু সেই গাড়ি ক্রেতাদের না দিয়ে নিজের নামে রেন্ট-এ-কার ব্যবসায় ব্যবহার করতেন।
এছাড়াও একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়ির জাল কাগজপত্র তৈরি করে একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেছেন তিনি। এমনকি একই গাড়ি ৩০ থেকে ৪০ জনের কাছেও বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, প্রতারণার মাধ্যমে তিনি আনুমানিক হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে বারবার যোগায়োগ করার চেষ্টা করলেও এবং কি মুঠোফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের মতে, যথাযথ প্রশাসনিক পদক্ষেপের অভাবে দণ্ডিত ব্যক্তিরা নির্বিঘ্নে জনপ্রতিনিধির পদ দখল করে রাখছেন, যা সুশাসন ও আইনের শাসনের জন্য বড় হুমকি।
মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হ্যাপী দাস বলেন, বিষয়টি আমি ওসি সাহেবের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে তথ্য নিয়েছি এবং নিয়ম অনুযায়ী আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।