ন্যাড়া পাহাড়ে ফসল ফলাতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে জুমিয়ারা
![](https://chengidarpon.com/wp-content/uploads/2023/04/Drug-soil-780x470.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার ,খাগড়াছড়ি :
উচু নিচু পাহাড়ের ঢালে বনাঞ্চল কেটে আগুনে পুড়ে যুগ যুগ ধরে বংশপরম্পরায় জুমে ফসল ফলাচ্ছে স্থানীয় ত্রিপুরা চাকমা সম্প্রদায়। বর্তমানে আগের সেই সনাতন পদ্ধতির জুম চাষ কমে গেলেও এখনো ৭০% উপজাতিই জুম চাষী। জুমের বুকে এক সময় ধান, হলুদ, আদা, নানা ধরনের সব্জি চাষ হতো। এখন সেই পাহাড়ে ধান হলুদ,আদা’র পাশাপাশি নানা ধরণের মিশ্র ফলের বাগন করা হচ্ছে।
পৌষ-মাঘ মাসে সুবিধাজনক সময়ে চাষের জন্য টিলা /পাহাড় জঙ্গল নির্বাচন করা হয়। তারপর সেই পাহাড়ের জঙ্গলের সমস্ত গাছ, বাঁশ, ঝাড়-জঙ্গল কেটে ফেলা হয় । কাটার পর সেগুলি রোদে শুকালে ফাল্গুন- চৈত্রে শুকনো বনাঞ্চল আগুনে পুড়িয়ে জুমের জমি তৈরি করা হয়। চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে অথবা বৃষ্টির পর নির্বাচিত জুমের জমিতে পুড়ে যাওয়া জঙ্গল ও আগাছার ছাই সারের কাজ করে। এর পর বিশেষ ধরণের ছোট দা’এর মাধ্যমে ছোট্ট ছোট্ট গর্ত করে একই সঙ্গে কয়েক ধরণের ফসল বোনা হয়। ধান, ভূট্টা, আলু, কলা,হলুদ আদা কচু সহ জুমের জমিতে প্রায় সব ধরণের খাদ্য শষ্য ও শাক-সব্জি চাষ করা হয়। জুমের ফসলের বীজ সমতলের চেয়ে ভিন্ন। এসব ফসল উৎপাদনে কোনো ধরণের সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়না। আর জুমের শষ্য, ফল-মূল ও তরি-তরকারির আকার-আকৃতি সমতলের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্যের চেয়ে ভিন্ন। এগুলো খেতে খুবই সুস্বাদু।
![](http://chengidarpon.com/wp-content/uploads/2023/04/Women-300x169.jpg)
ইতিমধ্যে পাহাড়ে ধান, হলুদ, মারফা, ছড়া কচু, তিল তিসি ,কাউন,তুলা সহ নানা ধরনের সব্জির বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় জুমচাষীরা । আবার অনেকে পাহাড়ে মিশ্র ফলের বাগানের পাশাপাশি মৌসুমি চাষ জুম ফসল কে বেছে নিয়েছে বলে জানান জুমচাষীরা।
৬৫ উর্ধ্ব কৃষক কাববারী ( উপজাতীয় গ্রাম প্রধান) বাদশা কুমার ত্রিপুরাা জানান, পাহাড়ি জমিতে হাল চাষ হয় না, তাই দৈনিক মজুর দিয়ে কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে জমি তৈরী করন, চারা গজানোর পর গাছের গোড়ায় মাটি ঠিক রাখা ,যত্ন নেওয়া সবই খরচের ব্যাপার । পারিবারিক ঐতিহ্য জুম চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। এ বছর চৈত্রের শুরুতেই বৃষ্টি থাকায় আগাম জমি তৈরী ও ফসল বীজ লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছি।