Breakingশিক্ষা / চিকিৎসাসারাদেশ

ধোবাউড়ায় কাগজ-কলমে’ই চলছে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, ধোবাউড়া : ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যান সহকারীদের দায়িত্বহীনতায় কাগজ-কলমে’ই চলছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্মিত হওয়া ২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা। স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যান সহকারীরা ক্লিনিকে প্রতিদিন কাগজ-কলমে উপস্থিত থাকলেও দিনের পর দিন থাকছেন অনুপস্থিত। অথচ নিয়ম অনুযায়ী সরকারি ছুটি ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না কেউ’ই।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা ক্লিনিকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গেলে ক্লিনিকে কাউকে না পেয়ে সেবা বঞ্চিত হয়ে ক্ষোভ নিয়ে বাধ্য হয়ে চিকিৎসার অসুস্থ্য অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে হচ্ছে। ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত সরকারি ওষুধ সরবরাহ থাকলেও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাচ্ছে না কাঙ্কিত সেবা।

বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দিতে ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করা হলেও বিরোধী দল ক্ষমতায় আসার পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ২০০২ সালে বর্তমান সরকার আবার পূনরায় এর কার্যক্রম শুরু করেন। সরকারি বেতন স্কেলে তিন মাসের প্রশিক্ষনে প্রতি ক্লিনিকে তিনজন করে নিয়োগ দেওয়া হলেও সরকারে এই প্রশংসনীয় পদক্ষেপটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে বর্তমানে এর কার্যক্রম শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ।

এনিয়ে সরজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রোপাইটার (সিএইচসিপি) ও দায়িত্বরত চিকিৎসক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিয়িমিত বসেন না। অনেকেই সপ্তাহে একদিন আবার কেউ কেউ মাসে একদিন এসে স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ করেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হওয়া সাধারণ মানুষ। উপজেলার চন্দ্রকোনা গ্রামের আঃ শহীদ ক্ষোভ নিয়ে বলেন, “আমরার চন্দ্রকোনা কমিউনিটি ক্লিনিক মাসে এহাদ্দিন খুলে, তুবও অফিসও গেলে ওষধ পাওয়া যানা”

দুধনই গ্রামের রফিক মিয়া বলেন, “ আমাদের দুধনই বাজারের ক্লিনিক মাঝে মধ্যে খুলে কিন্তু কোন রোগীই চিকৎসা পায় না, চিকিৎসার জন্য গেলেও বলে ওষধ নাই, সরকার নাকি ওষধ দেয় না, ওষধের জন্য হাসপাতালে যাইতে”

এছাড়াও এমন অগণিত অভিযোগ মেলে উপজেলার ভেদীকুড়া, উত্তর পঞ্চনন্দপুর, সোহাগীপাড়া, বলরামপুর, রায়কান্দুলিয়া, গোবিন্দপুর, সানন্দখিলা তারাইকান্দি, মধ্যশালকোনা, রাউতি, পাতাম, লাঙ্গলজোড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে। সপ্তাহ-পনেরদিনে একদিন ক্লিনিকে উপস্থিত হলেও কিছুক্ষণ থেকেই ক্লিনিক বন্ধ করে চলে যায় দয়িত্বরত চিকিৎসকেরা। এছাড়াও সপ্তহে একদিন স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে কর্মরত একজন মেডিকেল অফিসার ক্লিনিকে গিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার কথা থাকলেও ক্লিনিক বন্ধ থাকায় যাচ্ছে না কোন ডাক্তার।

অপরদিকে ক্লিনিকে রোগীদের মাঝে বিতরনেও জন্য দেওয়া ওষুধও বিতরণ না করে তা বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। এব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ আবু হাসান শাহীন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরতদের দায়িত্বহীনতার বিষয়ে মনিরটরিং চলছে এবং ইতিমধ্যে দুইজনকে শোকজ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঠিক প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Related Articles

Back to top button