চট্টগ্রামে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের বৈঠকে সরকারি নির্ধারিত দামে বিক্রি করার আহবান
চেঙ্গী দর্পন , স্টাফ রিপোর্টার ,চট্টগ্রাম : সয়াবিন তেল সহ ভোজ্য তেলের সরবরাহ সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাত সহ নানা কারনে দেশে ভোজ্য তেলের সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দাম নেয়ার বিরুদ্ধে সাধারন জনগন যখন সোচ্চার হয়ে উঠেছে এবং সরকারও কঠোর হচ্ছে ঠিক তখনই চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীবৃন্দ বৈঠকে করলেন।
অনেকটা হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জ বাণিজ্য ও শিল্প সমিতির নেতারা বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিলেন- এবার তারা সরকার নির্ধারিত দরে পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও পামওয়ের বেচাকেনা করবেন। নগরীর খাতুন গঞ্জে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ব্যবসায়ীদের প্রতি এমন আহবান জানান। এ সময় খাতুনগঞ্জের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম বৈঠকে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সরকার নির্ধারিত দরেই কারখানা থেকে ভোজ্য তেল কিনুন। আবার বিক্রির সময়ও সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি করবেন না। সভায় খাতুনগঞ্জ বাণিজ্য ও শিল্প সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি আবুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর পারভেজ সহ ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একটি নির্ভর যোগ্য সুত্র জানিয়েছে, ব্যবসায়ী নেতাদের বক্তব্যের পর একাধিক ব্যবসায়ী তাদের বক্তব্যে বলেন, সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে ভোজ্য তেল পরিশোধন কারখানা গুলো বেশি দরে বিক্রি করলেও তারা কিনবেন না। একই ভাবে বিক্রিও করবেন না। এ অবস্থায় ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক থেকে যে আহবান জানানো হয়েছে তা কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত:এ সপ্তাহে পাইকারি বাজারটিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কর্মকর্তারা অভিযান চালান। গত বুধবারও এক ব্যবসায়ীকে সরকার নির্ধারিত দরের বাইরে ভোজ্য তেল বিক্রি করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর সম্প্রতি এস আলমের অয়েল রিফাইনারিতে পরিদর্শন করে কিছু অনিয়ম দেখতে পেয়েছেন এবং তা সংশোধনের জন্য বলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ নিজেদের মধ্যে মিটিং করে সরকারি আইন-কানুন মানার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।
সভায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল বশর চৌধুরী বলেছেন, সরকার যখন দর বেঁধে দিয়েছে, তখন আমরা মানতে বাধ্য।’ সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আইন অনুযায়ী আমদানি ও পাইকারি পর্যায়ে কোন পণ্য কত দিন রাখা যাবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরে নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।
উল্লেখ্য, সরকারের পক্ষ থেকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী, মিলগেটে সয়াবিনের দর ১৪০ টাকা এবং খুচরায় খোলা সয়াবিনের দর ১৪৩ টাকা। পাম তেলের মিল গেটে দর লিটার প্রতি ১৩০ টাকা এবং খুচরায় তা ১৩৩ টাকা।