Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলসারাদেশ

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরাদের বৈসু শোভাযাত্রায় পাহাড়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ছোঁয়া

স্টাফ রিপোর্টার , খাগড়াছড়ি :
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়েছে। এতে ফুটে উঠেছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের মধ্যে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরের বিদায় উপলক্ষ্যে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার এবং বাদ্যযন্ত্র,নৃত্য নিয়ে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষের শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।

 

শুক্রবার(১১এপ্রিল) সকালে শহরের টাউন হল প্রাঙ্গণে ত্রিপুরাদের বর্ণিল ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি কমল বিকাশ ত্রিপুরা। উদ্বোধনের পরপরেই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়।শোভাযাত্রাটি প্রধান প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্বর ঘুরে মিলনপুর ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদে গিয়ে শেষ হয়।

 

আয়োজক কমিটির প্রতিনিধিরা জানান,ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিঝুসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর চাংক্রান-বিজু-বিহু-বিষু-পাতা উৎসব উদযাপন করা হয়। বছর ঘুরে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রাও।

 

বৈসু শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা ধীনা ত্রিপুরা বলেন, আমাদের বৈসু উপলক্ষে আজকে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রায় আমরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই-রিসা পড়ে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছি। আমাদের নাচের টিম নিয়ে আজকে এখানে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন অংশ নিতে আসছি।

এ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ অংশ নেন।। এছাড়াও নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার পড়ে ও নেচে গেয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

 

শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া তরুণীরা জানান “শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে খুব ভালো লাগছে। বন্ধুরা মিলে অংশ নিয়েছি। আমরা ট্রাকে করে গান করেছি। অনেক মানুষ অংশ নিয়েছে। খুবই কালারফুল একটা প্রোগ্রাম হয়েছে।” নিজেদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি স্বকীয়তা রক্ষায় এমন উদ্যোগ প্রতিবছরই নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

 

ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি কমল বিকাশ ত্রিপুরা বলেন,নিজেদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য এই আয়োজন। শোভাযাত্রায় ত্রিপুরাদের পাশাপাশি মারমা ও চাকমারা অংশ নেন।

 

জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ত্রিপুরারা প্রকৃতি পূজারী। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। যা আমাদেরকে মুগ্ধ থাকে সবসময়। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা বলেন,”আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য”এই প্রতিপাদ্যকেই সামনে রেখেই বৈসু উপলক্ষে ত্রিপুরা সম্প্রদায়েরা তাদের কৃষ্টি,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করে থাকে।

 

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা বলেন,”আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখেই বৈসু উপলক্ষে ত্রিপুরা সম্প্রদায়েরা তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করে থাকে। পার্বত্য এলাকায় চাকমাদের বিজু,মারমাদের সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরাদের বৈসুসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীরা এই উৎসবে মেতে উঠেন। সবাইকে বৈসাবির শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান বলেন,আজকে আমরা ত্রিপুরাদের যে অনুষ্ঠান টা
দেখলাম,খুবই কালারফুল,খুবই সুন্দর একটা অনুষ্ঠান দেখেছি। এই অনুষ্ঠান আমরা ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিমনা যে পরিচয় আমরা এখানে পেয়েছি। আসুন আমরা বৈসু-সাংগ্রাই-বিজুর উৎসব উপভোগ করি। সম্প্রীতির খাগড়াছড়ি গড়ি।

Related Articles

Back to top button