Breakingচট্টগ্রাম অঞ্চলপার্বত্য অঞ্চলরাঙ্গামাটিশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার শুরুর ঘোষনায় জেলেদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য

চেঙ্গী দর্পন, স্টাফ রিপোর্টার, রাঙ্গামাটি : দীর্ঘ ৩ মাস ১৭ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ১৭ আগষ্ট ২০২২ মধ্যরাত থেকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার, সংরক্ষণ ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে । দীর্ঘ সময় ধরে অলস সময় কাটানোর পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে জেলেদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

১০ আগষ্ট ২০২২ বুধবার রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কাপ্তাই হ্রদের মাছ শিকার বন্ধ খোলার বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি বিএফডিসি ব্যাবস্থাপক লেঃ কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম সহ মাছ ব্যাবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আগামী ১৭ আগষ্ট মধ্য রাত থেকে মাছ শিকার শুরু হয়ে ১৮ আগষ্ট মাছ ল্যান্ডিং হওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন বংশবৃদ্ধি, মজুদ এবং ভারসাম্য রক্ষার্থে সব ধরনের মৎস্য আহরণ ও পরিবহনের ওপর গত ১ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। তবে হ্রদে মাছ শিকারের ওপর তিন মাস নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও এ বছর হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় সময় আরও ১৭ দিন বাড়ানো হয়।

বিএফডিসি রাঙামাটি সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদ থেকে বিএফডিসির অবতরণ কেন্দ্রে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭,৬৭২ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭,৯৮১, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮,১২৩, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮,৪২৩ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮,৫৪৯ টন ও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৮ হাজার টন মাছ অবতরণ করা হয়েছিল। এ বছরও যদি গত মৌসুমের মতো মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরিত হয়, তাহলে মৌসুমের শেষের দিকে মাছ আহরণে ভাটা পড়তে পারে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন রাঙ্গামাটির ব্যবস্থাপক লেঃ কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম জানান, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন ও কার্প জাতীয় মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস মাছ শিকার ও বাজারজাত বন্ধ থাকে। কিন্তু এ বছর পাহাড়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় হ্রদের পানি বাড়েনি। তাই মাছের ডিম ছাড়ার সুবিধার্থে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা আরও এক মাস বাড়ানো হয়।

তিনি আরও জানান, কাপ্তাই হ্রদের মাছ শিকারে এবার নতুন কিছু নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে। জালের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ও ছিদ্র কতটুকু রাখ যাবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে পোনা মাছ রক্ষা করা যাবে।

উল্লেখ্য যে, ১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কর্ণফুলী নদীর ওপর বাঁধ দেওয়া হয়। এতে ৭২৫ বর্গকিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এশিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি হয়। এই হ্রদে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন প্রায় ২২ হাজার জেলে।

Related Articles

Back to top button