কর্ণফুলী নদী রক্ষায় বিভিন্ন সংগঠনের অনশন ধর্মঘট পালন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম :
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে অনশন ধর্মঘট পালন করছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন।
৯ নভেম্বর ২০২২ বুধবার ভোর ৬টা থেকে টানা ৮ ঘণ্টা নদীর মাঝখানে অনশন করেছে দুই শতাধিক সাম্পান মাঝি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর তীরে টিকে থাকা আড়াই শতাধিক বনজ ও ওষুধি গাছ সংরক্ষণ করার দাবি জানান তারা। নইলে আদালতের আদেশ অবমাননার অভিযোগ এনে আদালতে যাওয়ারও কথা জানান তারা।
নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, ২ হাজার ১৮১ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সুনির্দিষ্ট আদেশ থাকা সত্ত্বেও তা সাড়ে তিন বছরেও কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। আমরা কি ধরে নেব সরকারের চেয়ে জেলা প্রশাসনের চেয়ে দখলদারগণ শক্তিশালী? এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উপদেষ্টা মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান আহমদ সিদ্দিকি, পরিবেশ সংগঠন গ্রিন ফিঙ্গার্সের কো ফাউন্ডার আবু সুফিয়ান রাশেদ, রিতু ফারাবি, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর আহমদ, সহ-সভাপতি লোকমান দয়াল প্রমুখ।
এছাড়া কর্ণফুলী নদী রক্ষায় অবিলম্বে ৮ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কাছে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন পিপল’স ভয়েস। মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর কাছে এসব প্রস্তাব জানান সংগঠনের সভাপতি শরীফ চৌহান, সাংবাদিক মিঠুন চৌধুরী সহ সংগঠনের নেতারা।
পিপল’স ভয়েস এর প্রস্তাব সমুহ :-
কর্ণফুলীর মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতে নদীর জমি দখল মুক্ত করা। আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন প্রণীত অবৈধ স্থাপনার তালিকা জন সমক্ষে প্রকাশ এবং তালিকা অনুসারে উচ্ছেদ কার্যক্রম নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শেষ করা। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়া বন্ধে নিয়মিত ড্রেজিং ও সংযুক্ত খাল সমূহে পানি প্রবাহ অবাধ করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। নদীর দূষণ ঠেকাতে দু ‘পাড়ে অবস্থিত শিল্প কারখানা গুলোতে বাধ্যতামূলক ইটিপি স্থাপন এবং ইটিপি কার্যকর আছে কি না তা নিশ্চিত করতে পরিবেশ অধিপ্তরের নিয়মিত পরিদর্শনের দাবি জানানোর পাশাপাশি প্রস্তাব করা হয় পয়োবর্জ্য দূষণ ঠেকাতে মহানগরীর খাল গুলোর মুখে পরিশোধনে প্ল্যান্ট স্থাপন এবং নদীতে চলাচলকারী লাইটার সহ ছোট নৌযানের জ্বালানি ও বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ। সার্বিক ভাবে কর্ণফুলী নদীকে দখল মুক্ত রাখতে উদ্ধার হওয়া নদীর জমি পুনর্দখল ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নদীর জমিতে দেওয়া অবৈধ লিজ বাতিল করার দাবি জানানো হয়।