Breakingরাজনীতিশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

‘কমলনগরে বইছে ভোটের হাওয়া’

প্রচারণায় মূখরীত চর কাদিরা

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক ,কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) :  সময় ঘনিয়ে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের। আইন অনুযায়ী ২০২১ সালের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের আগে ইউপি নির্বাচন শুরু করতে হবে, আর শেষ করতে হবে জুনের আগেই। এ নিয়ে ইতোমধ্যে নির্বাচনের উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদের তালিকা চেয়ে জেলা প্রশাসকদের চিঠি পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

এখনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতোমধ্যে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে কমলনগর উপজেলার ৮ নং চরকাদিরা ইউনিয়নে বইছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। চায়ের দোকানে-দোকানে বইছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে বিশ্লেষণ। নড়েচড়ে বসেছে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

অনেকেই আগাম প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের সমর্থন আদায়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও চা-চক্রে নিজেদের জানান দিচ্ছেন অনেকেই।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমানতালে চলছে প্রচার-প্রচারণা। শুধু মাঠেই নয়, দলীয় সমর্থন পেতে একই ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থীর পক্ষ থেকে চলছে নানারকম তদবির, রাজনৈতিক কার্যালয় হয়ে উঠেছে সরগরম। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সকল প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছে আর ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নিজেদের গুনকীর্তন ও উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের ফিরিস্ত তুলে ধরছেন সমানে-সমান।

ভোটাররাও হর হামেশে তা মেনে নিয়ে পচন্দের প্রার্থীকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে ওয়াদা দিচ্ছেন।

চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে এই ইউনিয়নে আয়োতন ৪০.৯২ বর্গ কিলোমিটার। ইউনিয়নটির জনসংখ্যা ৩০ হাজার ৫১০ জন। এরমধ্যে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯২২৪ জন। ৮৯৯৮ জন নারী ভোটারের বিপরীতে পুরুষ ভোটার ১০২২৬ জন।

২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই ইউনিয়ন হতে ইসলামি আন্দোলন চরমোনাই সমর্থীত মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ “পীর সাহেব কমলনগর” হাতপাখা প্রতীকের নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর সাথে প্রতিদ্ধন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন একই ইউনিয়ন থেকে নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা আশ্রাফ উদ্দিন রাজন রাজু, বিএনপি থেকে উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হাওলাদার।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,বর্তমান চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আসন্ন নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। তাঁর পাশাপাশি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যে
কমলনগর উপজেলা কৃষকলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, কাদিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ওমর ফারুক ভূইয়া। প্রবীণ
বিএনপি নেতা ও নব্বইয়ের দশকে বৃহত্তর চর কাদিরা ইউনিয়ন থেকে পরপর তিন বারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন আহমেদ হাওলাদার, একই ইউনিয়ন থেকে নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান আশ্রাফ উদ্দিন রাজুসহ সকলেই আগাম প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ পীর সাহেব (কমলনগর) বলেন, আল্লাহর রহমত ও জনগনের ইচ্ছায় তিনি চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সরকারের দেওয়া সকল আমানত জনগনের মাঝে পৌছে দিয়েছেন,অত্যাচার জুলুম ব্যবিচার বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে তিনি ইউনিয়নবাসীর খেদমত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জনগন চাইলে তিনি আসন্ন নির্বাচনে আবারো অংশগ্রহন করবেন।

চরকাদিরার ভবিষৎ কান্ডারী ও আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ওমর ফারুক ভূইয়া বলেন, ইউনিয়নবাসীর সুখ দুঃখের অংশীদার হয়ে সকলের সেবক হতে চাই,জনগনের ডাকে সাড়া দিয়ে সাধ্যমত খেদমত করার চেষ্টা করি সবসময়। জনপ্রতিনিধি হতে পারলে আরো বেশি সেবা করার সুযোগ পাবো। জনগনও পর্যাপ্ত আগ্রহ দেখাচ্ছে যে কারনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। আল্লাহ চাইলে চেয়ারম্যান হলে ইউনিয়নটিকে সেবার মানদন্ডে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই আমার লক্ষ্য।

লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি’র সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন আহমেদ হাওলাদার বলেন,বৃহত্তর চরকাদিরা ইউনিয়নের তিন বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় অন্যায়কারীদের সাথে আপোষ করেননি কখনো। পরিষদ ছিল ন্যায় বিচারে অটুট। তিনি আরো বলেন
বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়নের উন্নয়ন ও গ্রাম্যদালত পরিচালনায় অনেকটাই ব্যর্থ। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মী ও জনগন তাকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে সমর্থন দিচ্ছেন। নেতাকর্মী ও জনগণের স্বার্থে তিনি প্রবীণ বয়সে আবারো ভোট যুদ্ধে অংশ নিবেন। বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধতা ও সর্বস্তরের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে আশাবাদি তিনি।

সাবেক চেয়ারম্যান আশ্রাফ উদ্দিন রাজু বলেন, আওয়ামীলীগের একজন পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে আসন্ন নির্বাচনে দল তাকে দলীয় মনোনয়ন দিবেন। এছাড়া জনগন এবং দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। তিনি আশাবাদি চরকাদিরাকে একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তর করতে দল তাকে এবার মূল্যয়ন করবেন।

তবে ইউনিয়ন ঘুরে পাওয়া জনগনের ভাষ্য হলো- দেশে চলমান উপ-নির্বাচনের মতো আসন্ন নির্বাচন চায় না তারা। তারা চান সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন। যে নির্বাচনে প্রার্থী যেই হোক ভোটাররা স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এমন প্রত্যাশা সাধারণ ভোটারদের।

Related Articles

Back to top button