Breakingখাগড়াছড়িচট্টগ্রাম অঞ্চলপার্বত্য অঞ্চলশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

অভাবে-অনটনে পরে নাড়ী ছেড়া ধনকে বিক্রির চেষ্টা মায়ের

স্বজনদের দাবি মা মৃগী রোগী ও কিছুটা ভারসাম্যহীন

চেঙ্গী দর্পন, স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি\
পৃথিবীতে সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মা। টানা পোড়নের সংসারে সেই মা-ই নাড়ী ছেড়া ধনকে বিক্রির জন্য নিয়ে গেছেন হাটে। ঘটনাটি খাগড়াছড়ি সদরের হলেও নেট দুনিয়ায় ইতিমধ্যে এ নিয়ে চলছে বেশ আলোড়ন। খাগড়াছড়ি সদরের ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের পাকুজ্জাছড়ি গ্রামের রামকৃষ্ঞ চাকমা। ছয় বছর বয়সে যেখানে মায়ের ¯স্নেহ -ভালোবাসা পাওয়ার কথা সেখানে তার ভাগ্যে জুটেছে উল্টো।

পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন মৃগী রোগে বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন মা সোনালী চাকমা।অভাবের সংসারে ছেলেকে ঠিক মতো পরিচর্যা করতে না পারায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দাবি মায়ের। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট রামকৃষ্ঞ চাকমা। ছোট ছেলেকে নিয়ে পৈত্রিক বাড়িতে গোয়াল ঘরের পাশে ছোট্ট একটি কুড়েঁ ঘরে কয়েকে বছর ধরে থাকছেন মা সোনালী চাকমা। সোনালি চাকমার স্বামীও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। বড় ২ ছেলে মা ও ছোট ভাইয়ের খবর না নেয়ার অভাব অনটনে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে। অভাব অনটন সহ্য করতে না পারে গত বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির সাপ্তাহিক হাটে ছেলে রামকৃষ্ঞকে বিক্রি করতে যান মা সোনালি চাকমা। ১২হাজার টাকায় বিক্রি করার প্রস্তাবে দর কষাকষির সময় সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল জীবন চাকমার উপস্থিতে রক্ষা হয় রামকৃষ্ঞের।

সুনীল জীবন চাকমা মা ছেলেকে পরিবারের জিম্মায় তুলে দেওয়ার পর বিষয়টি জানান ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে। ভাইবোন ছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান. তিনি ব্যক্তিগতভাবে মা ও ছেলের পাশে দাড়াঁনোর পাশাপাশি শিশুটিকে একটি শিশু সদনে থাকার ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করছেন।

অভাব অনটনের সংসারে ছেলেকে ঠিকমতো থাবার ও ভরণপোষন দিতে না পারায় কষ্টে পড়ে ছেলেকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন, মা সোনালি চাকমা। ছেলেকে ছেড়ে থাকতে অনেক কষ্ট হবে জানিয়ে অভাব ঘুচতে তাকে বিক্রির চেষ্টা অকপটে স্বীকার করে,কেদেঁও উঠেন মা।

স্বজনরা বলছেন, মৃগীসহ অন্যান্য রোগের প্রভাবে সোনালী চাকমা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। এ জন্য মাঝে মাঝে এলোমেলো কথা ও কাজ করেন।

ন্তানকে বিক্রির খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রামকৃষ্ঞের বাসায় যায় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা এমপি। তিনি জানান,পরিবারটির জন্য ৬মাসের খাদ্যশস্য ও নগদ কিছু অর্থ দিয়েছেন। এ ছাড়া সদর ইউএন ও কে বলে একটি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মো: ছাবের জানান, মৃগী রোগীদের মানসিক সমস্যাও হতে পারে। জেলা সদর হাসপাতালে এই রোগের ভালো ও বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়। রামকৃষ্ঞের মা সোনালি চাকমা চাইলে তাকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সহায়তা দেব।

এ বিষয়ে ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের মেম্বার ও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক মংসানু মারমা জানান,ছেলের মা মানসিক ভারসাম্যহীন,কখন কি বলে কি করে তার কোন তাল মাতাল ঠিক থাকে না। তবে অভারে সংসসার খুব কষ্ট করে চলে তাদের জীবন। ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বলেন, এই সংবাদ পাওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৫০ কেজি চাউল ও পড়ার জন্য কিছু কাপড় দিয়েছি।

Related Articles

Back to top button