অবৈধ অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ করায় লামায় ভূমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,, লামা (বান্দরবান) : পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলায় ভূমি রেজিস্ট্রেশনে কথিত এল.আর ফা-ের নামে অর্থ-আদায়ের প্রতিবাদ করায় স্থানীয়ভাবে ভূমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। আর এতে চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার সবচেয়ে জনবহুল এলাকা লামার ভূমি মালিকরা।
এদিকে লামায় স্থানীয়ভাবে ভূমি রেজিস্ট্রেশন পূর্ণবহাল এবং এল.আর ফা-ের নামে অবৈধ অর্থ আদায় বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে লামা উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ। ১৮ নভেম্বর (বুধবার) সকালে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজা রশিদের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সচেতন নাগরিক সমাজের এই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম’র চলতি বছরের ৩০ জুলাই এর অফিস আদেশে একজন সহকারী কমিশনার লামায় সপ্তাহে ২দিন অবস্থান করে রেজিস্ট্রেশন কার্য সম্পাদন করেন। এতে উপজেলায় ভূমি হস্তান্তর রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত কার্যক্রমে জন ভোগান্তি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। একারণে লামার সচেতন নাগরিক সমাজ সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত সপ্তাহে ৫দিনই লামা উপজেলা ভূমি অফিসে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালুর জন্য দাবি জানান। জেলা প্রশাসক স্থানীয়ভাবে ভূমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালুর না করে চলতি নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ ফেলর আরেক অফিস আদেশে লামায় সপ্তাহে দুইদিন চালু থাকা ভূমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম প্রত্যাহার জেলা সদরে নিয়ে যান।
স্থানীয়দের দাবি, এক সময়কার মহকুমা লামা উপজেলা সদও থেকে বান্দরবান জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় একশ কিলোমিটারের অধিক। এছাড়া লামা থেকে কক্সবাজার চট্টগ্রাম ঘুরে যেতে হয় বান্দরবান সদর। জেলা প্রশাসকের এই আদেশের কারণে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তেমনি সময় ও যাতায়াত ভোগান্তিতে।
কথিত এল.আর ফা-ের নামে অর্থ আদায় সম্পর্কে ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়, লামার ভূমি রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-সহকারী কমিশনার মো. কায়েসুর রহমান দলিলে উল্লেখিত মূল্যের উপর তিনশতাংশ হারে অর্থ জনতা ব্যাংক, বান্দরবান শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নং- ০৬৩৩০০২০৩৩০৯৪ এ জমা দিয়ে জমা স্লিপ রেজিস্ট্রেশন আবেদনের সাথে সংযোজনের জন্য দলিল লিখকদেও মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। লামায় অবস্থানকালীন সময়েও তিনি বাধ্যতামূলকভাবে ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে অর্থ আদায় করেছেন। যা সরকারি কোনো হিসাবে এই টাকা জমা হয় না।
সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক এম রুহুল আমিন বলেন, ১৯২০ সালে লামা থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। সাবেক মহুকুমা ও ১২ দিনের জেলা ছিল লামা উপজেলা। বান্দরবান জেলার এক-তৃতীয়াংশ মানুষের বসবাস লামা উপজেলায়। এ উপজেলা থেকে ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস প্রত্যাহার অত্যান্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, লামায় এল.আর ফান্ডের নামে অবৈধ অর্থ আদায়ের প্রতিবাদের এমন সিদ্ধান্ত পুরো ভূমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এটা মোটেই কাম্য নয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক মুহাম্মদ কামালুদ্দিন, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এস.কে খগেশ প্রতিচন্দ্র খোকন, বেলাল আহমদ, মো. ইলিয়াছ আরমান, কামরুল ইসলাম মহসিন, মোরশেদুুল আলম, মো. চান মিয়া সহ আরো অনেকে।