অন্ধত্বকে জয় করলো পানছড়ি কলেজের কেসিং মারমা
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,পানছড়ি ,খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে প্রথমবারের মতো এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কেসিং মারমা।খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালার একটি প্রত্যন্ত এলাকায় জন্ম গ্রহণ করলেও তার শৈশবকাল ও প্রাথমিক বিদ্যালয় এর সমাপনী শেষ হয়েছে ।মাটিরাঙ্গার বাইল্লাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এরপর মাটিরাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অন্যের সহযোগিতা নিয়ে পড়া রেকর্ড করে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি ও পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজ এর একই বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ২.৪২ পেয়ে পাশ করেছে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কেসিং মারমা জানায়,বাবার অনুপ্রেরণা, শিক্ষক ও বন্ধুদের উৎসাহে এতদূর এসেছি। দরিদ্র পরিবারের দুইভাই ও একবোনের মধ্যে সেই পড়ালেখা করছে। ছোট বেলা থেকে তার স্বপ্ন একজন শিক্ষক হওয়া। বাবা কৃষক। মা গৃহিনী।লেখাপড়ায় এগিয়ে যেতে পরিবারের বাইরে অনেকেই নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন।বিশেষ করে পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজে ভতি হওয়ার পর অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা তার পড়ালেখা আগ্রহ ও সাহসিকতা দেখে মেমোরি কার্ডসহ একটি ব্লটুথ সাউন্ড ডিভাইস উপহার দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও নানা ভাবে উৎসাহ ও বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তাছাড়া ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করার জন্য যে বই গুলো দরকার সে বই গুলোর যদি ব্যবস্থা হয়। তাহলে আমি অন্যের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে পড়তে পারবো। আমি সবার সহযোগিতায় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই । এবং একজন ভালো শিক্ষক হতে চাই।
জীবনের গন্তব্যে এতোটুকু পর্যায়ে এলেও ভবিষ্যৎ যেন অন্ধকারের বার্তা দিচ্ছে বলে জানান কেসিং মারমার পরিবার। কারণ সামনের দিকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক সার্মথ্য তাদের নেই । এই ক্ষেত্রে বিত্তবানরা যদি সুদৃষ্টি দেয় তাহলে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনচারুল করিম বলেন, কেসিং মারমা খুব আত্মবিশ্বাসী একজন ছাত্র । সে এইচএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়ায় আমি তাকে অভিনন্দন জানাই।প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নন। তাদের একটু উৎসাহ ও সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে তারা অন্য সবার মতো সমাজের উন্নয়নে সমান ভূমিকা রাখতে পারে। আমিও তাকে সাধ্যানুযায়ী সহযোগীতা করতে চেষ্টা করবো।আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা বলেন,আমাদের কলেজ থেকে দীপা নন্দী শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়া স্বত্তেও জিপিএ ৫ অর্জন করেছে অন্যদিকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কেসিং মারমা পাশ করেছে। তাদের সাফল্যে আমরা আনন্দিত। প্রতিবন্ধীতা মানে প্রতিবন্ধকতা নয় এটা তারা প্রমাণ করলো আরও একবার।তাদের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইলো।