Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

মাছ শিকারীরা চেঙ্গী নদীতে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছে

মো. ইসমাইল, চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,পানছড়ি, খাগড়াছড়ি: বৈশাখের মাঝামাঝি সময়েও বৃষ্টি না হওয়ার পুকুর নদি খালের পানি কমে যাওয়ায় পানছড়ির চেঙ্গী নদীতে চলছে মাছ ধরার উৎসব। কেউ ডুবিয়ে হাত দিয়ে, আবার কেউ জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে এসব মাছ ধরছে বিভিন্ন বয়সী মাছ শিকারী যুবক-যুবতী -বয়োজ্যেষ্ঠরা । টেংরা, গুইল্যা, টাকি, তেলাপিয়া, মাগুর, কারপু ,নলা, মলা পুটি সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরতে পেরে খুশি এলাকার এসব মাছ শিকারীরা।

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে অসংখ পাহাড়ী ছড়ার ছড়াছড়ি। এছাড়াও পাহাড়ের নিচে বাঁধ দিয়েও মাছ চাষ হয়। অসংখ্য পুকুর থাকলেও আছে প্রকৃতির দান অসংখ পাহাড়ী ছড়া। এসব ছড়ার রয়েছে ইছা,মলা,পুটি,গুইল্যা,টেংরা,শিং মাগুর, কাকড়া।এসব প্রাকৃতিক পাহাড়ি ছড়ার মিঠা পানি প্রবাহিত হওয়ায় মাছের প্রজনন ভাল হয়। যার কারণে রাবার ড্যাম বাঁধ দিলেই চেঙ্গী নদীর পানি ছড়া মুখে প্রচুর মাছ প্রজনন করে বেড়ে যায়।

সদরের তালুকদার পাড়ার ৭০ উর্দ্ধো বয়সি রহিম মেম্বার বলেন, সারা বছরই পাহাড়ী চেঙ্গী নদীতে তেমন পানি থাকে না। বর্ষার সময় কাপ্তাই বাধেঁর পানি উপরে আসে, তখন বড় মাছের সাথে ছোট পোনা মাছ উজানে চলে আসে। বর্ষা শেষে নদীতে হাটু পানি থাকেনা, নদীতে মাছও তেমন একটা থাকেনা। পানছড়ি রাবার ড্যাম ফুলিয়ে দিলে তখন নদীর পানি জমে ভরে যায় তখন ছোট মাছগুলো ৩ মাসে আটকানো পানিতে বেশ বড় হয়।

সবুজ চাকমা, চির কুমার চাকমা, জহির হোসেন সহ অনেকেই জানান, প্রতি বছর চৈত্রের শেষে বৈশাখের শুরুতে বৃষ্টির আগে রাবার ড্যামের পানি ছেড়ে দিলে আমরা মাছ ধরা উৎসবে মেতে উঠি। এ বছর বৃষ্টি না থাকায় এতদিন পানি আটকানো ছিলো।গতকাল বৃষ্টি র দেখা মেলায় আজ পানি ছেড়ে দিয়েছে তাই সবাই মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছি। আমাদের সুতকর্মা পাড়া,মোল্লাপাড়া,শান্তিপুর,চৌধুরী পাড়া,তালুকদার পারা, পোড়াবাড়ি, ফাতেমানগর,জিয়া নগর সহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েক শত মানুষ আমরা মাছ ধরেছি। পুটি,মলা,শোল, টাকি, কারপো,টেংরা সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা উপজাতীয় সম্প্রদায়ের তক্কা চাকমা জানায়,পানি কমে যাওয়ায় মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে কই,শিং, মাগুর, বাইন, মলা পুটি,শামুক,কাকড়া,ব্যাঙ সহ অনেক ধরনের মাছ ধরেছি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রিয় কান্তি চাকমা বলেন, পাহাড়ী ছড়ার পানি মিষ্টি। তাই এই এলাকায় মাছ পাওয়া যায়। রুই, মৃগেল কাতলা,তেলাপিয়া,সরপুটি সহ সব প্রজাতির মাছ এখন পানছড়ির বিভিন্ন পুকুরে চাষ হয়। চেঙ্গী নদীর ছড়া উপছড়ায় পুটি, টেংরা, পাবদা, কই, মাগুর, শোল, টাকি, কাকড়া,বাইম,কুইচ্যা, শামুক সহ পাওয়া যায়। তবে পাহাড়ি নদী হওয়ার সারা বছর পানি থাকে না। শুধু রাবারড্যাম বাঁধের ফলে ৩/৪ মাস আটকানো পানিতে প্রচুর মাছ জন্মে। পানি ছেরে দিলে দু একদিন মাছ ধরার আনন্দে সবাই অপেক্ষায় থাকে। তবে কৃষি জমিতে সার ও কীটনাশক বিষ প্রয়োগ, পানি কম হওয়া সহ নানা কারণে মাছের পরিমাণ কমে গেছে। মাছের প্রজনন বৃদ্ধিসহ মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম নির্মাণ জরুরী। পাশাপাশি স্থানীয় জনগনের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাছ রক্ষা করা হবে।

Related Articles

Back to top button