Breakingশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

তাড়াইলে নরসুন্দা নদীতে সাঁকো বানালেন হাদিছ

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক, তাড়াইল,কিশোরগঞ্জ : জেলার তাড়াইলে নিজের জমি বন্ধক রেখে ওই টাকায় জনস্বার্থে বাঁশের সাঁকো গড়েছেন তাড়াইল-সাচাইল (সদর) ইউনিয়নের পূর্ব পংপাচিহা গ্রামের জালদোয়া পাড়ার ইদ্রিছ মুনসীর ছেলে কৃষক হাদিছ মিয়া।

জানা গেছে,উপজেলার তাড়াইল-করিমগঞ্জ মুজিবুল হক চুন্নু সড়কের হাবিবুল্লাহ মসজিদ সংলগ্ন নরসুন্দা নদীর উপড় প্রায় ২ শত ফুট লম্বা জালদোয়া পাড়ার সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে এই সাঁকো। মুল সড়কে সাঁকোর পাশেই ব্যানারে লিখা কাঞ্চন সেতু। তার পাশেই আছে হাদিছ মিয়ার নিজ হাতে গড়া এখানে স্থায়ী ভাবে একটি সেতু নির্মানের ৪ ফুটের একটি কাঠামো।

হাদিছ মিয়া জানান,স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও উপজেলার সদর ইউনিয়নের এই গ্রামটি (জালদোয়া পাড়া) অবহেলিত। এই গ্রামে আছে ১৫০ জন ভোটার, ৫০ঘর বসতি এবং ৫শত লোকের বসবাস। গ্রামের সবাই কৃষক। গ্রামে নেই কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নেই কোনও মসজিদ।মুসুল্লিদের নামাজ আদায় করতে হয় নদীর ওপারে হাবিবুল্লাহ মসজিদে। গ্রামের শিক্ষার্থীরা নদী পেরিয়ে দিগদাইড় ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অথবা দুই কিলোমিটার দুরে উপজেলা সদরের শিক্ষাঙ্গনে যেতে হয় বিদ্যা অর্জনের জন্য।গ্রাম থেকে বেরিয়ে শীত,বর্ষা,খরা একমাত্র ভরসা নৌকা।অথচ একটি সেতুর জন্য অর্ধশতাব্দী অপেক্ষা করেও নিজেদের মৌলিক অধিকার অর্জিত হয়নি।

তিনি জানান,নিজের ৫০শতাংশ জমি বন্ধক দিয়ে ৭৫ হাজার টাকায় নিজে এবং দৈনিক মুজুরির ভিত্তিতে ৫জন শ্রমিক নিয়ে ১৫ দিনে তৈরি করেছেন এই কাঞ্চন সেতু। নামকরণ প্রসঙ্গে কথা হলে হাদিছ মিয়া জানান,উপজেলা পরিষদের সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মরহুম কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া কাঞ্চন আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। বেঁচে থাকতে উনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। তাঁকে উৎসর্গ করেই আমার এই প্রয়াস। ভবিষ্যতে জন প্রতিনিধি হওয়ারও ইচ্ছে নাই।জনগনের দু:খ-দূর্দশার কথা ভেবেই নিজ অর্থায়নে এই সাঁকো নির্মান করেন।

জালদোয়া পাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য ফজলু মিয়া জানান,নিজের টাকায় জনস্বার্থে এরকম একটি সাঁকো গড়ে বাহবা কুঁড়িয়েছেন হাদিছ মিয়া। দেশের প্রতিটি গ্রামে একজন করে হাদিছ মিয়া থাকলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন সহজ হতো।একই পাড়ার প্রবীন বাসিন্দা বকুল মিয়া,সাদেক মিয়া,হলুদ মিয়া,ছোয়াদ মিয়া,হক মিয়া,আবদুস ছালাম সহ অনেকেই পরোপকারী হাদিছ মিয়ার প্রশংসা করে বলেন,বিগত প্রশাসনের কাছে আমরা গ্রামবাসী একাধিকবার আকুতি মিনতি করেও এখানে একটি সেতুর বন্দোবস্ত করতে পারিনি।

গ্রামবাসীর আশা সাবেক জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া’র সুযোগ্য সন্তান বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তারুন্যের অহংকার জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া শাহীন এবং স্থানীয় সাংসদ কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) এর গর্ব জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু গ্রামবাসীর সুবিধার্থে পায়ে চলার মতো অচিরেই একটি স্থায়ী সেতু নির্মানের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

Related Articles

Back to top button