Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চলশিক্ষা / চিকিৎসাশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

ডাক্তার- নার্স সংকটে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা ব্যহত

মো. ইসমাইল, চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,পানছড়ি, খাগড়াছড়ি :জেলার ডাক্তার- নার্স সংকটে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা ব্যহত ডাক্তার – নার্স সংকটে চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

সরজমিনে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তেরোজন ডাক্তার থাকার কথা থাকলে আছে তিনজন, অপরদিকে চৌদ্দজন নার্সের বিপরীতে আছে ছয়জন। উপজেলার একমাত্র সরকারী হাসপাতালটির অবস্থা নাজুক । এক্সরে ও গাইনি বিভাগের সরঞ্জামাদি থাকা সত্বেও রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত জেলা সদরে ছুটতে হয়।

পানছড়ি উপজেলার পাশর্বর্তী উপজেলা মাটিরাঙার তাইন্দং-তবলছড়ি এলাকার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু ডাক্তার সংকটের কারণে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ বিত্তরা রোগী নিয়ে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম , ফেনি-কুমিল্লায় ছুটছে। নিন্মবিত্ত ও প্রত্যন্ত এলাকার রোগীরা হাসপাতালে ডাক্তার না থাকায় হাতুড়ে ডাক্তার ,পানিপড়া, বৈদ্যালি ও কবিরাজি চিকিৎসার প্রতি আসক্ত হয়ে পরছে। এসব অপচিকিৎসায় অনেকেই এক রোগের রোগী থেকে নানহ জটিল রোগের রোগী হয়ে কাৎরাচ্ছে। অনেকেই অপচিকিৎসায় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে পঙ্গুত্ব নিয়ে পড়ে আছে।

যে তিনজন ডাক্তার রয়েছেন তার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অনুতোষ চাকমা, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার বিদর্শী চাকমা, মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সুমেন চাকমা । ডেন্টাল সার্জন থাকার কথা থাকলেও মাতৃত ¡জনিত কারণে কর্মস্থলে নেই। কনসালটেন্ট, মেডিসিন ও গাইনিসহ চারজন থাকার কথা থাকলেও একজনও নেই। গাইনি হিসেবে ডা. মিনাক্ষী পানছড়ির কর্মস্থলে নাম থাকলেও ফরিদপুরে পর্দা কেলেঙ্কারিতে হাজতবাস খেটে সাময়িক বরখাস্তের কারণে অনুপস্থিত।


পাঁচটি ইউনিয়নের চারটি কমিউনিটি ক্লিনিকে শুধুমাত্র উল্টাছড়ি ইউনিয়নে একজন কমিউনিটি ডাক্তার আছেন। বাকি তিনটিতে শূন্য। ল্যাব টেকনেশিয়ান ২ জন থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র একজন। চৌদ্দ জন নার্সের বিপরীতে আছে মাত্র ছয়জন। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য পাঁচজন মালী থাকার কথা থাকলেও আছে দুইজন। অফিস সহকারী ছাড়াই চলছে স্বাস্থ্যসেবার এই বিশাল প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অনুতোষ চাকমা জানান, ডাক্তার সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবায় ঘাটতি রয়েছে কথাটা সত্য। আমাদের হাসপাতালের ডাক্তার রিপল বাপ্পি খাগড়াছড়ি সদর ও ডাক্তার আবির দীঘিনালা হাসপাতালে ডেপুটেশনে রয়েছেন। চিকিৎসক সংকটের কথা বারবার লেখা হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার নুপুর কান্তি দাশ জানান, পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকটের কথা আমার জানা আছে। এ নিয়ে মহা পরিচালক বরাবর পর্যন্ত লেখা হয়েছে। করোনার কারণে তিন পার্বত্য জেলার জন্য ডাক্তারই পাওয়া যাচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো কিছু একটা হতে পারে।

পানছড়ি উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা অভিযোগের সুরে বলেন, ইতিপুর্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন কোন ডাক্তার যোগদানের আগেই অন্যত্র বদলির রেকর্ড আছে। তাই যখন-তখন বদলির ব্যাপারে কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি ছাড়া পাহাড়ের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎিসা সেবা পাওয়া সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করে শূন্যপদগুলো পুরণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

Related Articles

Back to top button