Breakingখাগড়াছড়িপার্বত্য অঞ্চল

শান্তিপুর অরন্য কুটিরে দানশ্রেষ্ঠ কঠিন চীবর দান উৎসব শেষ হলো

চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক,পানছড়ি, খাগড়াছড়ি : বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ির পানছড়ি শান্তিপুর অরন্য কুটিরে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কঠিন চীবর দান’ উৎসব শেষ হয়েছে।

শান্তি ও মৈত্রির প্রতিক বৌদ্ধ তীর্থস্থান শান্তিপুর অরন্য কুটিরে ২১-২১ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে শুক্রবার বিকালে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কঠিন চীবর দান’ উৎসব শেষ হয়েছে।


অনুষ্ঠানে চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় বলেন,বুদ্ধের অহিংস নীতি অনুসরণ করলে সমাজে শান্তি ও সুখ আসবে। দুঃখ মুক্তি লাভের হেতু সঞ্চয়ের লক্ষে দুর্লভ মানব জীবনকে ইহ ও পরকালের সুখ সম্মৃদ্ধি লাভের প্রত্যাশায় বৌদ্ধ ধর্মীয় ঐতিহ্য বাহি আড়াই হাজার বছর পুর্বে দনঞ্জয় শ্রেষ্ঠীর তনয়া মহা উপাসিকা বিপাশা কর্তৃক প্রদর্শিত প্রথা অনুযায়ী দানশ্রেষ্ঠ কঠিন চিবর দান দানানুষ্ঠানের প্রথা চালু হয়। ধর্মের নামে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে ভিক্ষু সংঘকে (বৌদ্ধ সাধক) ভূমিকা রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ধর্মের কথা বলে নারীদের হেয় করা হয়। কিন্তু বৌদ্ধধর্মে অন্ধবিশ্বাস ও মৌলবাদের কোনো স্থান নেই।

অনুষ্ঠানে পার্বত্য আসনের সংরক্ষিত মহিলা এমপি বাসন্তি চাকমা বলেন বুদ্ধের অহিংস নীতিতে চললে ভেদাভেদ, অশান্তি থাকবে না।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ, রাঙ্গামাটি রাজ বনবিহারের পরিচালনা কমিটি র সভাপতি ও জেলা পরিষদ রাঙ্গামাটির সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান,পানছড়ি উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিতা ত্রিপুরা,থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনচারুল করিম, কুটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ সমির দত্ত চাকমা, সহ কযেক হাজার দায়ক-দায়িকাগন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৈরি চীবর (বৌদ্ধ সাধকদের পরার কাপড়) উপস্থিত হাজার হাজার নারী-পুরুষের সাধুবাদ ধ্বনির মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন। পরে তা সব প্রাণীর সুখ ও মঙ্গল কামনায় উৎসর্গ করা হয়।এছাড়াও ধর্মীয় রীতিতে পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টপরিষ্কার দানসহ নানা দানের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এরপর পাঁচ শতাধিক ভিক্ষু একযোগে ধর্মীয় প্রার্থনা করেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে শান্তিপুর অরণ্য কুটিরের অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা সাধক পরম মৈত্রেয় লাভী শ্রীমৎ শাসন রক্ষিত মহাথের পুণ্যার্থী নারী-পুরুষের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা (উপদেশ বাণী) দেন। পরে কুটির প্রাঙ্গণে সারি সারি প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা করা হয়।

Related Articles

Back to top button