Breakingশিক্ষা / চিকিৎসাশীর্ষ সংবাদসারাদেশ

মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, চেঙ্গী দর্পন ,শরীয়তপুর : খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শরীরিক প্রতিবন্ধী কৃষক মো. দাদন মোল্লার মেয়ে রাবেয়া আক্তার। মেধাকে যে কোনোভাবে দমিয়ে রাখা যায় না তা আবারও প্রমাণ করেছে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার। হতদরিদ্র পরিবারের জন্মনেয়া রাবেয়া যখন অর্থাভাবে তার মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।

তখননি হতদরিদ্র অভাবী পরিবারের কথা জেনে রাবেয়ার সমস্ত পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান রাবেয়া চলতি বছর খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার সখিপুর ইউনিয়নের হাজী ইমান আলী মোল্লাকান্দি গ্রামের মো. দাদন মোল্লা ও ডালিয়া বেগম দম্পতির পাঁচ মেয়ের মধ্যে সেজ রাবেয়া আক্তার। রাবেয়ার বাবা দাদন মোল্লা পেশায় একজন কৃষক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। মা ডালিয়া বেগম গৃহিণী। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মেধাবী রাবেয়া ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভীষণ আগ্রহী। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর অধ্যাবসাইয়ের মাধ্যমে সে বাড়ির পাশের ৭০নং সখিপুর মোল্লা বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে সাধারণ বৃত্তি পেয়ে পিএসসি পাস করে। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা: হুমায়ুন কবির উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করে। পরবর্তী সময়ে হাজী শরীয়তউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ২০২০ সালে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়।

এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায় সে। কিন্তু অদম্য মেধাবী রাবেয়া মেডিকেলে ভর্তি সুযোগ পেয়েও সে ও তার পরিবার যখন চরম হতাশায়। তখনি পরিবারের বিষয়ে জেনে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম রাবেয়ার সমস্ত পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন।

রাবেয়ার বাবা দাদন মোল্লা বলেন, মেয়েকে ঠিকভাবে লেখাপড়ার খরচ দিতে পারিনি। তারপরও সে নিজের ইচ্ছা শক্তিতে ও কঠিন পরিশ্রম করে লেখাপড়া অব্যাহত রেখেছে। এখন মেয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে এত টাকা আমি কিভাবে জোগাড় করবো চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু সেই চিন্তা থেকে মুক্ত করলো উপমন্ত্রী শামীম ভাই। আল্লাহ তাকে সুস্থ রাখুক। দীর্ঘজীবী করুক।

রাবেয়ার মা ডালিয়া বেগম বলেন, আমার মেয়েকে আমরা পরিবার থেকে কোন সহযোগীতা করতে পারি নাই। রাবেয়া টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে। আমার মেয়ে ডাক্তার হবে, এটা যে কত খুশির বুঝাতে পারবো না।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম মুঠোফোনে বলেন, আমার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত বেগম আশ্রাফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অন্তত ১৫০ শিক্ষার্থীকে পড়াশোনা জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার, ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে। নদী ভাঙা মানুষকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। শরীয়তপুরে ৭০ হাজার মাস্ক এবং পাঁচটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিলাম।

তিনি বলেন, যেহেতু রাবেয়া প্রতিবন্ধীর মেয়ে। তাই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পড়াশোনার খরচ দেব। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে রাবেয়াকে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলে দেয়া হবে। প্রতি মাসে খরচের টাকা একাউন্টে চলে যাবে।

Related Articles

Back to top button