নাইক্ষ্যংছড়িতে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘তথ্য আপা’ ডিজিটাল সেবা
![](https://chengidarpon.com/wp-content/uploads/2021/02/18-5-780x470.jpeg)
চেঙ্গী দর্পন প্রতিবেদক , নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) :: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ডিজিটাল তথ্যের সম্ভার নিয়ে আসা ‘তথ্য আপা’রা। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার অধীন বাস্তবায়নাধীন ‘তথ্য আপা’
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামের তৃণমূল পর্যায়ের মহিলা ও শিশুদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় এবং উপজেলা তথ্যকেন্দ্রের আয়োজনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম গুলোতে দোরগোড়ায় গিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, ব্যবসা, জেন্ডার এবং কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য সেবা প্রদান করছে। গ্রামের নারীদের কাছে ‘তথ্য আপা’ হিসেবে পরিচিত আপারা বাল্যবিয়ে, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতামূলক উঠোন বৈঠকও করছেন।
সরকারি সেবাগুলো জনগণের দোরগাড়ায় পৌঁছাতে সার্বিক সহযোগিতা করছেন এ তথ্য আপারা। নাইক্ষ্যংছড়ির ৫টি ইউনিয়নের তথ্য আপারা নিয়মিত বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ সেবা প্রদান করছেন। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা (তথ্য আপা) তাহমিনা আক্তার জানান, ‘শেখ হাসিনার বারতা, নারী পুরুষের সমতা, শেখ হাসিনার সহায়তায় তথ্য আপা পথ দেখায়’ এ স্লোগান নিয়ে তথ্য আপা : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি তথ্য সেবা প্রদান কার্যক্রম শুরু করে। মূল উদ্দেশ্য গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের তথ্য প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন করা। তিনি বলেন, বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় তিনজন তথ্য আপা নিয়মিত এ সেবা প্রদান করছেন।
উপজেলা তথ্য সেবা সহকারী জান্নাতুল ফেরদৌস শাখি (তথ্য আপা) ও মাবিয়া আক্তার জানান, তারা তথ্যকেন্দ্রে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, উপজেলার সরকারি সেবাগুলোর সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ, ভিডিও কনফারেন্স, ই-লার্নিং, ই-কমার্স ইত্যাদি কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন করছেন। এছাড়া তারা ল্যাপটপ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকাধীন গ্রামবাসীর বাড়িতে গিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, ব্যবসা, জেন্ডার ও কৃষিবিষয়ক তথ্য সেবা প্রদান করছেন। তাঁরা আরও জানান, তারা গ্রামের নারী ও শিশুদের ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাকরির খবর, বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল, সরকারি সেবা বিনামূল্যে সরবরাহ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বাড়িতে গিয়ে বিনামূল্যে ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ওজন পরিমাপ, বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রধানদের সঙ্গে ফেস টু ফেস কিংবা স্কাইপ/ফোনের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দেয়ার কাজ করছেন। উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কিত বিষয় যেমন স্বাস্থ্যগত সমস্যা, বাল্যবিয়ে, ফতোয়া, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাকরি সংক্রান্ত, আইনগত সমস্যাসহ ডিজিটাল সেবা সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি জানান, বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন দেশের সার্বিক অগ্রগতির অন্যতম শর্ত। নারীর ক্ষমতায়নে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। বাংলাদেশের গ্রামের অসহায় দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত কিংবা কম সুবিধাপ্রাপ্ত নারীর তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং তাদের তথ্যপ্রযুক্তির সেবা প্রদান নিঃসন্দেহে নারীর ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করবে। এ লক্ষ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘তথ্য আপা’ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন শীর্ষক প্রকল্পটি পরিচালনা করা হচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় প্রায় দুই বছর ধরে এই কার্যক্রম করছে তথ্য আপারা। ইতিমধ্যে তথ্য আপারা বেশ কয়েকটি সফল উঠোন বৈঠক করেছেন। তারা ডোর টু ডোর ভিজিট করে নারী ও শিশুদের তথ্যসেবা প্রদান করছেন বিনামূল্যে।